স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে প্রতি শনিবার পশুর হাট বসছে নবীগঞ্জের জনতার বাজারে। বিষয়টি নজর কেড়েছে খোদ মন্ত্রণালয়ের। মন্ত্রণালয় দেশের যে কয়টি পশুর হাট না বসানোর জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছে তার মধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলার জনতার বাজার রয়েছে। সম্প্রতি সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ঢাকায় এক সভার সিদ্ধান্ত হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্তে বলা হয়- মহাসড়কের ওপর বা তার পাশে কোন পশুর হাট ইজারা প্রদান করা যাবে না। অবৈধভাবে পরিচালিত জনতার বাজারে যেন পশুর হাট না বসে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে। অপরদিকে, ভ‚ক্তভোগীরা অভিযোগ করেন জনতার বাজারে অবৈধভাবে বেচাকেনা হচ্ছে গরু-ছাগল। আর টাকার বিনিময়ে ক্রেতাদের দেয়া হচ্ছে প্রত্যয়নপত্র। আদায়কৃত টাকা যাচ্ছে বাজার পরিচালনা কমিটির কয়েকজনের পকেটে। পশুরহাটের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। শনিবার (২৪ এপ্রিল) দিনভর জনতার বাজারে পশুর হাট বসায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। অভিযোগের জবাবে বাজার কমিটির কয়েকজন নেতৃবৃন্দ তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন এলাকার লোকজনের স্বার্থে বাজার পরিচালনা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। বাজার কমিটির সহ-সভাপতি সাজিদুর রহমান ও সদস্য মোঃ আব্দুর রশিদ জানান, তারা কোন হাসিল আদায় করছেন না। যৎসামান্য আদায় করা টাকা বাজার পরিচালনায় নিয়োজিত ভলান্টিয়ারদের দেয়া হয় এবং বাকি টাকা মসজিদে দান করা হয়। এ বিষয়টি মানতে নারাজ আশপাশের লোকজন। তাদের পক্ষে গজনাইপুর গ্রামের মৃত আজির উদ্দিনের ছেলে মাইন উদ্দিন এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি অবৈধভাবে পরিচালিত জনতার বাজারে গরু ক্রয়-বিক্রয়কারীগণের নিকট হতে টাকা আদায়কারীগণের বিরুদ্ধে আইনের যথাযথ ধারায় মামলা দায়েরপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানান। তিনি ২০ জনের নাম ঠিকানা উল্লেখ করে বলেন- উল্লেখিত ব্যক্তিগণ সরকারী আইন অমান্য করে ঢাকা-সিলেট হাইওয়ের পাশে অবৈধভাবে জনতার বাজারে গরুর বাজার বসিয়েছেন। ফলে হাইওয়ে স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘœ হয়। কিছুদিন পূর্বে সিলেট বিভাগের ডিআইজি যানজটে প্রায় ২ ঘন্টা আটকা পড়েন। বিষয়টি জেলা আইন শৃংখলা কমিটিতে আলোচিত হলে, জেলা প্রশাসক হাইওয়ের পাশে বসায় সরকারের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী বাজারটি বন্ধ করে দেন। কিন্তু উল্লেখিত ব্যক্তিগণ অবৈধভাবে গরুর বাজার বসিয়ে গরু ক্রয়-বিক্রয়কারীগণের নিকট হতে রশিদ দিয়ে ১০০০ (এক হাজার) টাকা অথবা কয়েকটি গরু একটি রশিদে লিখে দুই হাজার আটশত টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন। প্রতি বাজারে উল্লেখিত ব্যক্তিগণ ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। গজনাইপুর গ্রামের মাইন উদ্দিন তার অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করেছেন তারা হলেন- দক্ষিণ গজনাইপুরের আজির উদ্দিন, গোলাম মর্তুজা সপন, কাজী জাহিদ আহমেদ, মোঃ কাওছার আহমেদ, মোঃ নজির উদ্দিন মিয়া, মোঃ আনছার উদ্দিন, মোঃ আব্বাস উদ্দিন, মোঃ জামাল মিয়া, মোঃ শাহিদ উদ্দিন, মোঃ আব্দুল হাই, মোঃ মশাহিদ, মোঃ শাহ কামাল, মোঃ আব্দুল কামাল, মোঃ সুমন মিয়া, মোঃ আব্দুল আউয়াল, মোঃ হারিছ মিয়া, মোঃ রাসেল মিয়া, আশরাফুল, মোঃ রিপন, কাজী জাহিদ আহমদ।
Leave a Reply