স্টাফ রিপোর্টারঃ নবীগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে বালু খেকো চক্র। দীর্ঘদিন ধরে নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মাটি ও বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড়, রাস্তা, বেড়িবাঁধ, ফেচির বাজার নদীতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী বালুখেকো চক্রের নেতৃত্বে কুশিয়া নদীর দীঘলবাক, দূর্গাপুর, পাহাড়পুর, পারকুল, কুমারকাদাঁ এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এসব বালু নবীগঞ্জ উপজেলার কসবা ও মৌলভীবাজার জেলার শেরপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। বালুখেকোরা বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখলেও নিরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। যে কারনে বালু খেকোরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এছাড়া বানিয়াচং উপজেলার ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদী থেকে নৌকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলন করছে আরেকটি চক্র। সম্প্রতি সেনাবাহিনী ও নৌ ফাঁড়ি পুলিশ অভিযান চালিয়ে কুশিয়ারা নদী থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করে। তবুও বন্ধ হচ্ছে বালুখেকোদের আগ্রাসন।স্থানীয়রা জানান, দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সুযোগে দৌলতপুর ইউনিয়নের হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় গেল কয়েক মাস যাবত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে মাটি-বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী চক্র। চক্রটি প্রথমে নদীর মধ্যবর্তী স্থানে বসানো ড্রেজার মেশিন দিয়ে একটি বড় স্টিলের নৌকা বোঝাই করে বালু ও মাটি দিয়ে। পরে তা অন্যত্র সরিয়ে ফের একইভাবে তোলা হয় বালু মাটি। এভাবে প্রতিদিন অন্তত ১ লাখ ঘনফুট বালু-মাটি উত্তোলন করে আসছে।
অন্যদিকে, কুশিয়ারার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত কাতিয়া লঞ্চ ঘাট এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু মাটি উত্তোলন করছে একতা এন্টার প্রাইজ নামধারী একটি চক্র। ভাঙ্গা বাড়ী, ফেচির বাজার, কশবা বাজার ও শেরপুর বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু বিক্রির রমরমা বাণিজ্য করে আসছে চক্রটি। এছাড়াও এসব এলাকার বিভিন্ন স্থানে স্তুপ করে রাখা বালু বিক্রি করে আসছে তারা। একটি মেশিন দিয়ে নির্দিষ্ট স্থান থেকে বালু উত্তোলন করার কথা থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি সেই নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নদীর তীরবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে ৩ থেকে ৪টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে অনবরত বালু উত্তোলন করেই আসছে।
এলাকাবাসীর দাবী, ওই এলাকায় কোন বৈধ বালু মহাল নেই। অথচ বালু খেকো চক্রটি প্রভাব বিস্তার করে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে মাটি-বালু উত্তোলন করছে। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না। আবার যদি কেউ কথা বলেও তা হলে তাদেরকে হামলার হুমকি দেয়া হয়। যে কারণে দিনের পর দিন বালু তোলায় নদী পাড়ের ফসলি জমি ও এলাকার রাস্তা ঘাট এখন হুমকির মুখে রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, নদীতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মাটি বালু উত্তোলন করা হয়। যা নদীর তলদেশ থেকে শুরু করে আশপাশের এলাকায় এতটাই বড় গর্তের সৃষ্টি করছে যে কোন সময় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিতে পারে। আর এতে করে বিলীন হতে পারে শত শত ক্ষের ফসলি ও শাকসবজির জমি। তবে এ বিষয়ে নিরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে দ্রুত কার্যকর প্রদক্ষেপ নেয়ার দাবী এলাকাবাসীর।
Leave a Reply