স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পানি কমে আসায় হবিগঞ্জের নদ-নদীগুলোতে কমতে শুরু করেছে পানি। জেলার প্রধান নদীগুলোর অনেক পয়েন্টেই এখন বিপদসীমার নিচ দিয়ে পানি অতিবাহিত হচ্ছে। নদ-নদীর পানি কমলেও দূর্ভোগ কমেনি বন্যা দুর্গতদের। তবে বন্যায় আক্রান্তদের পাশে দাড়িয়েছে সাধারণ মানুষসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। প্রতিনিয়ত তাদেরকে দেয়া হচ্ছে খাদ্য সামগ্রীসহ ত্রাণ সহায়তা। স্থানীয়দের আশা বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় এবং ভারত থেকে আর পানি না আসলে জেলায় বিস্তৃর্ণ হবে না পরিস্থিতি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস থেকে দেয়া তথ্যে দেখা যায়, জেলায় এ পর্যন্ত ৬টি উপজেলার মানুষ বন্যায় কবলিত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া উপজেলাগুলো হল, চুনারুঘাট উপজেলা, মাধবপুর উপজেলা, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা, হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলা। এসব উপজেলায় মোট ২৯টি ইউনিয়নের ১৬ হাজার ৪৪০টি পরিবার বন্যার পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। আর এতে করে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬০ জন মানুষ। গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সুমি রানি বল। তিনি জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের জন্য এখন পর্যন্ত মোট ১২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে চালু রয়েছে ৭টি কেন্দ্র। আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোর মধ্যে ৪৫২ জন পুরুষ, ৫২৫ জন মহিলা, ১১১ জন শিশু ও ৫ জন প্রতিবন্ধি আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে গবাদি পশু ও সাথে নিয়ে এসেছেন। এদিকে গতকাল শনিবার দুপুর পর্যন্ত চুনারুঘাট উপজেলায় খোয়াই নদীর বাল্লা পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার, শায়েস্তাগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মাছুলিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার, বানিয়াচং মার্কুলি পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার এবং আজমিরীগঞ্জের কালনী নদীতে ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে বন্যা দুর্গত বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায় পানি কমতে শুরু করলেও দূর্ভোগ কমেনি দুর্গতের। এখনও বহু ঘরবাড়ি রয়েছে পানির নিচে। গরু বাছুর ছাগলসহ গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া উমেরা খাতুন নামে এক নারী জানান, ঘর বাড়ি পানির নিচে থাকায় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছি। তবে আমাদের মালামাল পানিতে নষ্ট হয়ে অনেক ক্ষতি হয়েছে। হাছেনা খাতুন নামে আরেক নারী জানান, পানি ধীরে ধীরে কমছে। তবে এখনও আমরা বাড়ি যেতে পারছি না। আমাদের দূর্ভোগও কমছে না।
Leave a Reply