স্টাফ রিপোর্টারঃ– হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার আগ মুহূর্তে সংগঠনটির শীর্ষ পদ পেতে তদবিরে ব্যস্ত এখন অর্ধশতাধিক নেতা। তবে বর্তমান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, সাবেক নেতাদের গড়ে ওঠা ‘সিন্ডিকেটের আশীর্বাদ’ নিয়ে এবার পদ পাওয়া সম্ভব নয়। নানা নাটকীয়তা এবং বিতর্কের তিন বছর পর আবারও শুরু হতে হচ্ছে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি। তবে জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে অনেকেই জীবন বৃত্তান্তে উপস্থাপন করেছেন ভূয়া তথ্য ও জাল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ। এমনটাই অভিযোগ করেছেন একই পদ প্রত্যাশী অন্য প্রার্থীরা। বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জমা হওয়া প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে ভিন্ন কিছু তথ্য। জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সেল বরাবরে জীবন বৃত্তান্ত প্রেরণ মোশারফ হোসেন আরিফ বাপ্পি নামে এক ব্যক্তি। জীবন বৃত্তান্ত অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১ লা জানুয়ারী ১৯৯৩ অপরদিকে ওই ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যমতে জন্ম তারিখ ২৫ মার্চ ১৯৮৯ অথাৎ হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার দিন পর্যন্ত তার বয়স ছিলো ৩২ বছর ৮ মাস প্রায়। যা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের বাহিরে। জীবন বৃত্তান্তের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে জাল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ। এতে সহজেই ধরা পড়ে অনেক গুলো ভূল বানান। এসএসসি ও এইচএসসি দুই পাসের সনদে পিতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে দুই রকম ভাবে, উভয় পরিক্ষার মাঝখানে ১০ বছরের পার্থক্য। শুধু বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতাই নয়, ব্যবহার করেছেন ভূয়া সাবেক পদ/পদবীও। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এই সংগঠনকে যার যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই ব্যবহার করছেন বলে মন্তব্য করছন প্রবীণ নেতারা। এর আগে, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সিভি সংগ্রহে গত ২ জানুয়ারী হবিগঞ্জ আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহানুর রহমান সোহান, সহ-সম্পাদক রুবেল শিকদার এবং উপ-প্রচার সম্পাদক ফয়জুল্লাহ মানিক। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তথ্য মতে, মোট সিভি জমা পড়েছে ৫৭টি। এর মধ্যে সভাপতি পদ প্রত্যাশী ২০টি এবং সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ৩৭টি। তবে বরাবরের মতই এদের বেশীরভাগই হাইব্রীড, অনু- প্রবেশকারী, ভুয়া ছাত্র এবং বয়স্কদের সংখ্যাই বেশী। অভিযুক্ত সভাপতি পদপ্রত্যাশী মোশারফ হোসেন আরিফ বাপ্পির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক আমার হবিগঞ্জ’কে বলেন, ‘আমি একটি প্রাইভেট স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছি, আইএ পাস করেছি একটি প্রাইভেট কলেজ থেকে। মাস্টার্স করেছি একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে’। স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জানতে চাইলে তিনি কোন প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে নারাজ হয়ে লাইন কেটে দেন।এর আগে, গত ২১ ডিসেম্বর মেয়াদোত্তীর্ণ ও বিতর্কিত নানা অভিযোগ থাকায় কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল- নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বিলুপ্ত ঘোষণা করেন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি।
Leave a Reply