শেখ মোঃ হারুনুর রশিদ, চুনারুঘাট: চুনারুঘাট উপজেলার স্থানে স্থানে বিভিন্ন ধরণের বারমাসী ফসল চাষ হয়ে আসছে। যদিও বলা হচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এ প্রশিক্ষণ পেয়ে কৃষকরা নাকি চাষাবাদে মনযোগী রয়েছেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো প্রকৃত কৃষকরা প্রশিক্ষণ পাচ্ছে না। নামধারী কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এ কারণে চুনারুঘাটে ফসল উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। প্রশিক্ষণ না পাওয়ায় প্রকৃত কৃষকদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সূত্র জানায়, বিভিন্ন অনিয়ম আর দুর্নীতির মধ্য দিয়ে চলছে চুনারুঘাট উপজেলা কৃষি অফিসের কার্যক্রম। ১৪ মে মঙ্গলবার উপজেলা কৃষি অফিসে উপজেলা পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তর বিষয়ে ৬০জন কৃষক-কৃষাণীদের প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ শেষে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু সংখ্যক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, ট্রেনিংয়ে আমাদেরকে পর্যাপ্ত উপকরণ আর খাবার দেওয়ার কথা থাকলেও তারা পাননি। আর এ প্রশিক্ষণে প্রকৃত মাত্র কয়েকজন কৃষক-কৃষাণীর অংশগ্রহণ ছিল। বাকীরা ছিলেন নামধারী।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার জালাল উদ্দিন সরকার- এর কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার প্রধান সহকারী জানেন। আপনি তাঁর কাছে যান। প্রধান সহকারী উৎপল কুমার দত্তের কাছ থেকে কৃষকদের নাস্তা ও দুপুরের খাবারের ভাংতি তালিকা দেখতে চাইলে তিনি বলেন, সব কিছুই তো অনলাইনে তালিকাটা আছে। কিন্তু কম্পিউটার নষ্ট থাকার কারণে দেখাতে পারছিনা। তিনি মুখে বললেন ট্রেনিংয়ে একজন কৃষকদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩৫০ টাকার একটি প্যাকেজ ও নগদ ৫০০টাকা সম্মানি। রমজানের কারণে নাস্তা ও খাবার মিলিয়ে ইফতার প্রদান করা হয় অংশগ্রঞনকারীদের মাঝে। কিন্তু দুই একটা হিসাব হাতে কলমে লিখলেও কোন সঠিক হিসাব দিতে পারেননি তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি অফিসের এসএপিপিও নুরুল ইসলাম খাঁন। একপর্যায়ে অফিসার জালাল উদ্দিন সরকার বললেন আমার কাছে আসেন। পূণরায় তাঁর কাছে গেলে তিনি বলেন পারফেক্ট হিসাব দিতে পারে কয়জন। আবার ও প্রশ্ন করলে অফিসার ও প্রধান সহকারী উৎপল কুমার বলেন ৩৫০ টাকার প্যাকেজের মধ্যে নাকি সরকারী ভ্যাট বাবদ ৬৩ টাকা কর্তন হয়। এছাড়া একটি ১০ টাকা মূল্যের খাতা, একটি প্যাড ৪০টাকা, একটি কলম ৫টাকা, একটি ১৫টাকা দামের পানির বোতলের হিসাব দিলেও খাবারের প্যাকেটের সুনির্দিষ্ট কোন হিসাব দেয়নি তাঁরা। তবে একজন কৃষকের হিসাব অনুযায়ী একটি প্যাকেটে সর্বোচ্চ ১১০ টাকার খাদ্যসামগ্রীর বেশী থাকেনা। সব মিলিয়ে অফিস ও কৃষকের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী ২৪৩ টাকা খরচ। জনপ্রতি বাকি ১০৭ টাকা যায় কই? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে চুনারুঘাটের কৃষক সহ সমাজের সচেতন মহলের কাছে।
এছাড়াও কৃষি অফিসের বিরুদ্ধে কৃষকদের রয়েছে নানান দুর্নীতির অভিযোগ। তাঁরা বলেছেন আমরা মাথার ঘাম পায়ে পেলে এত কষ্ট করি অথচ আমাদের ন্যায্য খাবারটুকুও পাচ্ছিনা। এর চেয়ে দুঃখ আর কষ্টের বিষয় কি হতে পারে। চুনারুঘাট উপজেলার সকল কৃষক তাঁদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।
Leave a Reply