বানিয়াচংপ্রতিনিধিঃ বানিয়াচং চৌধুরীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মিল হোসেন খানের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌনহয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মিয়াখানি মহল্লাস্থ শিক্ষকের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ত্রিকর মহল্লা এলাকার ভুক্তভোগী ছাত্রীর চাচা তাৎক্ষনিক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে ঘটনাটি জানান। পরে বিকেলে দিকে ছাত্রীর বাবা লিখিত অভিযোগ জমা দেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলামের কাছে। ছাত্রীর বাবা জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায়। তখনও অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা প্রাইভেটে এসে পৌঁছায়নি। এই সুযোগে শিক্ষক মোজাম্মিল তার ব্যক্তিগত কক্ষে নেয় ছাত্রীকে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানগুলো স্পর্শ করে। জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানি করেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রী কক্ষ থেকে দৌঁড়ে বের হয়ে পাশের বাড়ির এক মহিলার শরণাপন্ন হয়। ওই মহিলা ছাত্রীর মা’র কাছে খবর পাঠালে মা এসে ছাত্রীকে নিয়ে যান। প্রধান শিক্ষক মোজাম্মিল আগেও অনেক ছাত্রীর সাথে এমন আচরণ করছেন বলে লিখিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর চাচা জানান, খবর পেয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে জিজ্ঞাসা করেন। এসময় প্রধান শিক্ষক তার কৃতকর্মের জন্য শিক্ষা অফিসারের সামনেই আমার কাছে সহ ছাত্রীর বাবা-মা’র কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। বানিয়াচং উপজেলা প্রাথমিক (ভারপ্রাপ্ত) শিক্ষা কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম বলেন, সকালে ছাত্রীর চাচার মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক স্কুলে ছুটে যাই। তখন স্কুল কমিটির সভাপতি কাজল চ্যার্টাজি, প্রধান শিক্ষক মোজাম্মিল হোসেন খান ও ছাত্রীর মা-বাবার সামনে ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞাসা করলে ছাত্রী ঘটনার বর্ণণা করে। এ সময় উপস্থিত প্রধান শিক্ষক ঘটনার কথা অস্বীকার করেন। ছাত্রীর বাবা বিকেলের দিকে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেবেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষককে দুদিনের জন্য পাঠদান কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার ওসি (তদন্ত) আবদুল কাইয়ূম বলেন, দুপুরের দিকে ঘটনাটি পরস্পরের মাধ্যমে জেনে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ খোঁজখবর নিয়েছে। রাতে আমি সহ পুলিশ সদস্যরা ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে ছাত্রীসহ তার বাবার জবানবন্দী নিয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষক এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। ইউএনও মো.মামুন খন্দকার বলেন, রাতে ছাত্রীর বাড়িতে গিয়েছি। তখন তার সঙ্গে থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল কাউয়ুম ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম ছিলেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখবেন বলে জানালেন ইউএনও মামুন খন্দকার।
Leave a Reply