স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের আয়া পদে কর্মরত মায়া রাণীর বিরুদ্ধে ডেলিভারী করাতে গিয়ে প্রসূতি মহিলার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে নবজাতকের অবস্থা আশংকাজনক। এ নিয়ে এক বছরে ডজনেরও বেশি প্রসূতি মহিলার মৃত্যু হলেও মায়া রাণীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিনদিন তার দৌঁড়াত্ম মারাত্মক আকার ধারণ করছে। গতকাল রবিবার সকালে ওই ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মারফত আলীর স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২২) প্রসব ব্যাথা নিয়ে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে গেলে আয়া পদে কর্মরত মায়া রাণী রোগীর অবস্থা আশংকাজনক বলে জানান,‘ “এখনি ডেলিভারী না করালে মা ও নবজাতকের মৃত্যু হতে পারে”। পরে ডেলিভারী বাবদ তাদের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে মায়া। ভয়ে প্রসূতির পরিবারের লোকজন তার কথা মত রাজি হয়ে তাকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করে। বেলা ১২টার দিকে নরমাল ডেলিভারী করাতে গিয়ে গৃহবধূ সাদিয়ার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে তার অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে। সাদিয়ার অবস্থা আশংকজনক হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। গৃহবধূ সাদিয়ার পরিবারের অভিযোগ- মায়া রাণী ডেলিভারীর সময় নাড়ি কেটে ফেলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে তার মৃত্যু হয়। এদিকে সদর হাসপাতালে এসেও ভোগান্তির শিকার হন মৃত সাদিয়ার পরিবারের লোকজন। ডাক্তার মৃত ঘোষণার পর হাসপাতালের স্টাফরা তাকে ইসিজি করান। পরে রহস্যজনক কারণে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে কর্তব্যরত ডাক্তার এ ঘটনায় স্টাফদের প্রতি ক্ষিপ্ত হন। স্থানীয়দের অভিযোগ আয়া কর্মরত পদে মায়া রাণী কয়েক বছর ধরে কাকাইলছেও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছে। এমন কি প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে সেখানে পরিবারের নিয়ে বসবাস করে যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। অপরদিকে সাদিয়ার পিতা কাকাইলছেও ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মন্নর আলী হাসপাতালে লাশের পাশে আক্ষেপ করে জানায়, সাদিয়া আমার প্রথম কন্যা, তার প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই মায়া রাণীর অপচিকিৎসায় সে মারা গেল। আমি মায়া রাণীর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিব। এ ব্যাপারে আয়া পদে কর্মরত মায়া রাণীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জানার পর পরই তিনি লাইন কেটে দেন। এর তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
Leave a Reply