স্টাফ রিপোর্টারঃ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুর থেকে মিশুক চালক নাঈম (১৪) কে অপহরণ নিয়ে গলাকেটে হত্যার দায়ে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে তারা হত্যাসহ সার্বিক বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। গত শনিবার বিকালে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল-২ আদালতে তারা এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আটকদের বরাত দিয়ে চুনারুঘাট-মাধবপুর সার্কেলের এএসপি নির্মলেন্দু চক্রবর্তী জানান, মিশুকের ব্যাটারির জন্য পরিকল্পিতভাবে তারা নাঈমকে অপহরণ করে নিয়ে চুনারুঘাট-মাধবপুরের সীমান্তবর্তী রঘুনন্দন পাহাড়ে গলাকেটে হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ মিশুকের ব্যাটারি উদ্ধার করেছে এবং এ মামলার আরও আসামি ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। আটকরা হল, লস্করপুর ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের মর্তুজ আলীর পুত্র কামাল মিয়া, জয়নগর গ্রামের মৃত জিতু মিয়ার ছেলে সজিব মিয়া, তোফাজ্জল ও মাসুম। ৪ জনই পর্যায়ক্রমে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। পরে বিজ্ঞ বিচারক তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন। প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে নাঈম তার বাড়ি থেকে অটোরিকশা নিয়ে চালানোর জন্য বের হন। এর পর থেকে তিনি অটোরিকশাসহ নিখোঁজ হয়। পরে (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে দিকে চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের নিখোঁজের ৩দিন পর চুনারুঘাট উপজেলার রঘুনন্দন পাহাড়ের রাবার বাগানের উঁচু চূড়া থেকে তার গলাকাটা পচে গলে যাওয়া অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। পরে সুরতহাল শেষে বিকেলে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করা হয়। এদিকে আসামি গ্রেফতার হয়নি মর্মে সংবাদ প্রকাশ হলে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ পৃথক অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনায় জড়িত কামাল মিয়াকে হবিগঞ্জ সদর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। পরে তার দেখানো মতে হবিগঞ্জ কামড়াপুর সামিয়া ও আল্লাহরদান ব্যটারী হাউজে বিক্রি করা চারটি ব্যাটারি উদ্ধার করে জব্দ করেন। এর আগে শায়েস্তাগঞ্জ ওলিপুর সিটি পার্কের সামন থেকে অটোরিকশার বডি উদ্ধার করা হয়। একই সাথে এ চক্রের দুজনকে গ্রেফতার করেন। গ্রেপ্তার কামালসহ একটি চক্র নাঈমকে ভাড়া করে চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের রঘুনন্দন পাহাড়ের নির্জন স্থানের উঁচু চূড়ায় নিয়ে গিয়ে গলাকেটে হত্যা করে টমটম গাড়িটি ওলিপুরে রেখে ব্যাটারী খুলে প্রথমে হবিগঞ্জের সামিয়া ব্যাটারী হাউজে ২১ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পরবর্তীতে সামিয়া হাউজ থেকে আল্লাহর দান ব্যাটারী হাউজ থেকে ২১ হাজার ৫০০ টাকায় খরিদ করে সজিব মিয়া। এসব তথ্য প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে গ্রেপ্তারকৃতরা। এর মধ্যে আসামী সুবীর মিয়া গত শুক্রবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হালিম এর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। পুলিশের কাছে কামাল মিয়া স্বীকার করে সে হত্যাকারীদের সাথে ছিল এবং মিশুকের ব্যাটারী সবুর মিয়ার নিকট বিক্রির সময় সাথে ছিল। কিন্তু তার বয়স কম হওয়ায় আদালতে তার জবানবন্দি গ্রহণ করেনি। সজিব মিয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে চোরাই ব্যাটারী ক্রয়ের কথা স্বীকার করে। এদিকে হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই সনক কান্তি দাশ, এএসআই শিবলু মজুমদার ও সুহেল দেবের নেতৃত্বে শরীফপুর থেকে তাদেরকে আটক করে।
Leave a Reply