নুর উদ্দিন সুমন : হবিগঞ্জের বানিয়াচং চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষন মামলার আসামী অলিম মিয়া(১৭) কে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামী অলিম মিয়াকে (২৪ আগস্ট) মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জানা যায়, গত-২১ আগস্ট বিকেলে লম্পট অলিম মিয়া যাত্রাপাশা এলাকার ৬ বছরের এক শিশু বাচ্চাকে ফুসলাইয়া তাহার ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। ভিকটিমের শোর চিৎকার শুনে ভিকটিমের মাতা ও ভাই ভিকটিমকে আসামীর ঘর হতে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। ঘটনার সময় ভিকটিমের যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল এবং তার পরনের কাপর-চোপড় রক্তাক্ত ছিল। ভিকটিমের পিতা রিকশা চালক ঘটনা শুনে বাহির থেকে এসে ভিকটিমকে চিকিৎস্যার জন্য দ্রুত বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক মুমূর্ষ অবস্থায় ভিকটিমকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এর পর লম্পট অলিম মিয়া পালিয়ে যায়। এমন শিশু ধর্ষণের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি ও বানিয়াচং সার্কেল পলাশ রঞ্জন দে শিশুকে দেখতে হাসপাতালে ছুটেযান এবং ভিকটিমের চিকিৎসার খোজ খবর নেন। একই সাথে অভিযুক্ত লম্পট অলিমকে দ্রুত গ্রেফতার করতে নির্দেশ প্রদান করেন। ধর্ষণের ঘটনায় শিশুর পিতা ২২ আগস্ট বানিয়াচং থানার মামলা দায়ের করেন। গতকাল সোমবার রাতে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেনের নেতৃত্বে
পুলিশ সুপারের দিক- নিদের্শনায় ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বানিয়াচং সার্কেলের তদারকিতে পুলিশ টীম সর্বোচ্চ প্রযুক্তিগত সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মামলা রুজুর ২৪ ঘন্টার মধ্যে আজমিরীগঞ্জ থানাধীন জলসুখা বিরাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে অলিম মিয়াকে আটক করেন। অলিম উপজেলার যাত্রাপাশা এলাকার মোতাহার মিয়া ওরফে মোক্তারের ছেলে। এ বিষয়ে ২৪ আগস্ট বিকেলে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি তার নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মাহমুদুল হাসান, হবিগঞ্জ সদর সার্কেল মাহফুজা আক্তার শিমুল,বানিয়াচং সার্কেল পলাশ রঞ্জন দে, ওসি ডিবি মো: আলআমিন সহ আরো অনেকেই। এবিষয়ে পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে এবং সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে স্বীকারও করেছে। উক্ত মামলার সুষ্ঠ তদন্ত দ্রুত সমাপ্ত করত: পুলিশ রিপোর্ট বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করে আসামীর দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করা হবে। বানিয়াচং থানার ওসি,মোহাম্মদ এমরান হোসেন, জানান, ঘটনার সময় ধর্ষকের পরিবারের অন্যান্য লোকজন পার্শ্ববর্তী মন্দরী সাকিনে একটি বউভাত অনুষ্ঠানে ছিল এবং ভিকটিমের মা বাসন মাজার জন্য পুকুরঘাটে গেলে ধর্ষক অলিম মিয়া ভিকটিমকে ফুসলাইয়া তাহার ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। ইতোমধ্যে ভিকটিমের পরনে থাকা রক্তমাখা কাপড়-চোপড়সহ অন্যান্য আলামত জব্দ ও শিশু ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং ভিকটিম বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে। এদিকে মামলা রুজুর ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িত অলিম মিয়াকে গ্রেফতারের ফলে ভিকটিমের পরিবারসহ এলাকায় সাধারণের মাঝে স্বস্থি ফিরে আসে এবং থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানান স্থানীয়রা ।
Leave a Reply