নুর উদ্দিন সুমন : মোহম্মদ উল্ল্যা বিপিএম পিপিএম হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে । সময় পেয়েছেন ২ বছর দশ মাস। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, অপরাধ প্রতিরোধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে গতিশীল পুলিশিং, মাদক, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণসহ বিট পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং জোরদার করাসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠির পাশে থেকে জনকল্যাণমুখী পুলিশিং বাস্তবায়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। আর এ অল্প সময়েই কর্মগুনে আলো ছড়িয়ে তিনি জয় করেছেন জেলাবাসীর মন। তাইতো বিদায় বেলায় ভাসলেন প্রশংসা, আবেগ ও ভালোবাসায়, সিক্ত হলেন ফুলেল শুভেচ্ছায়। পুলিশের ২৪ তম ব্যাচের এ কর্মকর্তা গত ৪ জুলাই সহকারী মহাপরিদর্শক হিসেবে বদলি হন। এর পর থেকে জেলার বিভিন্ন থানা পুলিশ, রাজনৈতিকদল, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা তাকে বিদায় ও শুভেচ্ছা জানান। রোববার (১১ জুলাই ) বিকেল সাড়ে ৫ টায় চুনারুঘাট থানা কর্তৃক আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট নাগরিকরাও প্রশংসায় ভাসালেন বিদায়ী এ পুলিশ কর্মকর্তাকে। অভিন্ন কণ্ঠে স্মরণ করলেন জেলায় তার অবদানের কথা। হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বপালনকালে জেলাবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনি কাজ করেছেন একাগ্রচিত্তে। পুলিশি সেবা সাধারণ মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে নিয়েছেন নানামুখী উদ্যোগ। তার সময়ে জেলা পুলিশের মোবাইল এপ্লিকেশন প্রচলন, অনলাইনে নাগরিক সেবা, অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রদান, অনলাইন জিডির প্রচলন, গঠিত নারী ও শিশু সহায়তা সেল। যার সুফল পাচ্ছেন সকলেই। এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা কে একজন সৃষ্টিশীল পুলিশ সুপার হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন অনেকে। নিরাপদ সড়ক চাই নিসচার সভাপতি মো: কামরুল ইসলাম মনে করেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা কর্মের মূল্যায়ন হিসেবেই এত প্রশংসা তিনি কুড়িয়েছেন। সবার কাছেই তিনি প্রিয় মানুষ হতে পেরেছেন বলেই তিনি জেলার মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন। গুরুতপূর্ণ স্থানে পদায়নও তার নিজের কর্মেরই ফসল। এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা প্রশংসায় ভাসিয়ে ও শুভ কামনা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন- চুনারুঘাট থানার ওসি মো: আলী আশরাফ, ইন্সপেক্টর তদন্ত চম্পক দাম, সেকেন্ড অফিসার অলক বড়ুয়া প্রমুখ।
অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন থানার সকল অফিসার্স ও ফোর্সবৃন্দ। সকলের বক্তব্য শেষে অনুভুতি ব্যক্ত করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, ‘আমার যাবতীয় যত প্রশংসা সবকিছুই সহযোদ্ধা-সহকর্মী পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য। সকলেই আমাকে এমনভাবে সহায়তা করেছে, তারা এমনভাবে দায়িত্বগুলো পালন করেছে যার ফলশ্রুতিতেই আমি আজ সম্মানিত বোধ করছি, কতটুকু সার্থক হয়েছি সে আপনাদের বিচার্য! আমি পুলিশিং এর ক্ষেত্রে চৎড়ধপঃরাব পুলিশিংয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। তবে, আমার এ ২ বছর ১০ মাস পথ চলায় কি দিয়েছি, কি পেয়েছি, সে হিসেব করার দুঃসাহস আমার নেই। শুধু এইটুকো বলবো আমি ভালোবাসা কুড়াতে এসেছি এবং বুক ভরে হবিগঞ্জবাসীর ভালোবাসা নিয়ে যাচ্ছি।দায়িত্ব পালনকালে হবিগঞ্জবাসীর ঐকান্তিক সহযোগিতা পেয়েছি। বিদায়বেলা আমার চলার পথে কাউকে আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও কোন কষ্ট দিয়ে থাকলে নিজগুণে ক্ষমা করে দিবেন। দেখা হবে কোন এক পথে-প্রান্তরে। তখনো যেনো বলতে পারি আমি আপনাদেরই একজন।আপনাদের সকলের জন্য রইল দোয়া ও শুভ কামনা। পরিশেষে সকলের দোয়া ছেয়ে বিদায় নেন তিনি । অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাকে সংবর্ধনা স্বরূপ ক্রেস্ট প্রদান করে চুনারুঘাট থানা পুলিশ।
Leave a Reply