রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
বন্যায় হবিগঞ্জে ১৬৯ কিলোমিটার রাস্তা ও ৬টি ব্রীজ ক্ষতিগ্রস্থ ॥ মেরামত করতে খরচ হবে ১৪১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ॥ কার্যালয়ে তালা বানিয়াচঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ॥ ভাইয়ের হাতে ভাই খুন জেলা বিএনপির দোয়া মাহফিলে জিকে গউছ ॥ শেখ হাসিনার কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে ধ্বংস করতে পারেনি হবিগঞ্জে নবাগত পুলিশ সুপার রেজাউল হক খানের যোগদান চুনারুঘাটে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৩ দাঙ্গাবাজ কারাগারে নুরপুরে ত্রাণ বিতরণকালে জিকে গউছ ॥ যারা অন্যের সম্পদ লুন্ঠন করে তারা দুস্কৃতিকারী, তারা সন্ত্রাসী নবীগঞ্জে যুবক খুন মিরপুর বাজার রণক্ষেত্র ॥ দুুই দিনে ১০ ঘন্টা সংঘর্ষ ॥ আহত ৪ শতাধিক হবিগঞ্জে কমছে পানি ভাসছে ক্ষত চিহ্ন

খোয়াই নদী থেকে বালু উত্তোলন হুমখীর মুখে সেতু প্রতিরক্ষা বাঁধ বাড়িঘর

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ২৭৬ বার পঠিত

জাহাঙ্গীর আলম,চুনারুঘাটঃ- উচ্চ আদালত ও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কড়া নির্দেশনার পরও থামছেনা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। কোন ধরনের নিয়ম-নীতির তোয়াক্ষা না করেই হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকার খোয়াই নদীর গর্ভ থেকে শ্যালো মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী বালু কারবারিরা। নদীর পাড়ে বালু ফেলার ফলে নষ্ট হচ্ছে পাড়ের ফসলি জমির উর্বরতা। এমনকি ট্রাক, ট্রাক্টর,এস্কেবেটর মেশিন নদীর তীরে নেয়ার জন্য নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্বিচারে কাঁটছে তারা। সেতুর এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও সেতুর আশ পাশেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অবৈধ এই কারবার বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বার বার জরিমানা করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। প্রভাবশালী এই বালু কারবারিদের ভয়ে স্থানীয় লোকজন কিছু বলতে সাহস পাচ্ছেন না।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে,কাজিরখিল খোয়াই সেতু,পাকুড়িয়া খোয়াই সেতু ,রাজার বাজার খোয়াই সেতু এলাকাসহ আমকান্দি ঝুঁকিপূর্ন খোয়াই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় খোয়াই নদীর গর্ভে শতাধীক শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু তুলা হচ্ছে। উপজেলার খোয়াই নদীর সীমানায় ৩০ টি পয়েন্ট দিয়ে নদীর পাড়ে ডুকছে ট্রাক্ট,ট্রাক্টর, এস্কেবেটর মেশিন। প্রতিদিন ট্রাক,ট্রাক্টর দিয়ে বালু নেওয়ায় খোয়াই নদীর দু’পাড়ের প্রতিরক্ষা বাঁধ রয়েছে হুমখীর মূখে।
চুনারুঘাট উপজেলার খোয়াই নদীর বিভিন্ন অংশে ইজারা নেয়া তিন জন ইজারাদারই সরকারী নিয়মবর্হিভূতভাবে বালু উত্তোলন করছেন। তারা বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুসরন না করে বালু ও মাটি উত্তোলন করছেন। ফলে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার বাঁধ, সেতু ও বাড়িঘর হুমখীর মূখে পড়ছে।
এদিকে,কাজিরখিল বাজার,পাকুড়িয়া,কাঁচুয়া ও রাজার বাজারে রাস্তার পাশে বালুর ডিপু করায় রাস্তায় সৃষ্টি হচ্ছে যানযট। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। ২৫ টনি বালু ভর্তি শতাধীক ড্রাম ট্রাক দিয়ে প্রতিদিন বালু পরিবহন করায় এলকার সড়ক মহাসড়কে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইজারাদারদের ক্ষুদ্র সার্থ রক্ষা করতে প্রতি বছর সড়ক মেরামত করতে সরকারের কোটি কোটি টাকার অপচয় হচ্ছে।
এদিকে,ভারতের খোয়ই এলাকা থেকে খরস্রােতা খোয়াই নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করে চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা সীমান্তের টেকেরঘাট কুলিবাড়ী এলাকা দিয়ে। কুলিবাড়ী থেকে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ খোয়াই নদী পর্যন্ত ৩৬ কিলোমিটার নদীর দু-পাড়ের বাঁধ রক্ষা করতে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন র্বোড খরছ করছে। অথচ প্রতিদিন প্রকাশ্যে এর উপর দিয়ে চলাচল করছে মাটি বোঝাই ট্রাক,ট্রক্টির। এলাকাবসীর অভিযোগ,হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা বালু ব্যবসায়ীদের সাথে ছড়িত।
এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশবাদিরা। তবে দায় নিতে নারাজ পানি উন্নয় বোর্ড কতৃপক্ষ। তারা বলছে অগোচরে কাঁটা হচ্ছে বাঁধ। তরা প্রভাবশালী তাই তাদের কিছু করা যাচ্ছেনা।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ বলেছেন,অবৈধ ভাবে যারা খোয়াই নদীর দু-পাড়ের বাঁধ কাঁটছে তাদের বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চুনারুঘাট সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিলটন চন্দ্র পাল বলেন,যারা বৈধ ইজারা নিয়ে ইজারার শর্ত ভেঙ্গে সরকারি নিয়মভর্হিভূতভাবে বালু উত্তোলন করছে তাদের বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অবৈধ বালু পাচারকারিদের বিরোদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খোয়াই নদীর উভয় পাড়ের বাঁধে ট্রাক,ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ ,খোয়াই নদী থেকে অবৈধ ভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন বন্ধসহ রাস্তার পাশে অবৈধ বালুর ডিপু গুলো বন্ধ করতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি কামনা করছে এলাকার স্থানীয় ভক্তভূগী জনগন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক চুনারুঘাটের কৃতিসন্তান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কালের কন্ঠকে বলেন, খোয়াই নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদী মারাত্মত ক্ষতি হচ্ছে। সরকারের কঠোর নির্দেশনার পরেও বালু উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছেনা। স্থানীয় প্রসাশন ও জন প্রতিনিধি যৌথ ভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে এগিয়ে আসতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com