প্রথমসেবা ডেস্কঃ- কুমিল্লায় ভাতিজিকে ধর্ষণ মামলায় এক ব্যক্তি জামিনে বের হয়ে মোটর শোভাযাত্রা করেছেন। এছাড়া স্বজনরা তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেছেন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আর ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর (১৪) পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের এই কিশোরীর বাবা সাংবাদিকদের জানান, গত বছর নভেম্বর তার স্ত্রী অসুস্থ হলে তাকে কুমিল্লায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় তার কিশোরী মেয়ে বাড়িতে একা ছিল।
সেই সুযোগে সোহেল মিয়া (৪৫) তার ভাতিজিকে চার দিন ধর্ষণ করেন এই অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করলে কিশোরীকে হত্যার হুমকি দেন সোহেল মিয়া। এদিকে ঘটনা গোপন রাখতে গিয়ে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। আর স্বজনদের চাপের মুখে কিশোরীর পরিবার আইনগত ব্যবস্থা নিতে দেরি করে।
সম্প্রতি অস্ত্রোপচারে কিশোরীর সন্তান হয়। তাকে পুলিশের মধ্যস্থতায় দত্তক দেওয়া হয়েছে।
নাঙ্গলকোট থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘটনা জানার পর কিশোরীর পরিবারকে থানায় আনা হয়েছিল। তার বাবা গত ১৪ জুন মামলা করলে পরদিনই সোহেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মাস খানেক কারাগারে থাকার পর সম্প্রতি সোহেল জামিন নিয়ে বের হন।
জামিনে বের হওয়ার সময় স্বজনরা তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন। আর শুক্রবার সোহেল দলবল নিয়ে এলাকায় মোটর শোভাযাত্রা বের করেন।
ওসি বখতিয়ার বলেন, “মোটর শোডাউন ও উল্লাসের বিষয়টির খোঁজ নিচ্ছি। এছাড়া আমরা পরবর্তী পদক্ষের জন্য ডিএনও প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি। ইতোমধ্যে ঢাকায় নমুনা পাঠানো হয়েছে। আর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিশোরীর মেডিকেল টেস্ট হয়েছে।”
এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে।
বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন পরিষ চেয়ারম্যান মো. জাহাজান বলেন, “সোহেল তার নিজের ভাতিজিকে ধর্ষণ করেছেন বলে কিশোরী দাবি করছে। ঘটনা প্রকাশ না করার জন্য ওই কিশোরীকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে সোহেল। পরে আমরা তাকে পুলিশে দিই।
“এখন আবার সোহেল এলাকায় এসে মোটরসাইকেল শোডাউন করে ফুলের মালা গলায় দিয়ে উল্লাস করেছে। এটা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। একটা লজ্জাজনক ঘটনাকে সোহেল তামাশায় পরিণত করতে চাচ্ছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।”
এ ঘটনায় কিশোরীর পরিবারসহ এলাকার অনেকে আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন।
হেসিয়ারা এলাকার বাসিন্দা ইউপি সদস্য মঞ্জল হক বলেন, “ধর্ষণের মামলায় জামিন নিয়ে এসে সোহেল মোটরসাইকেল শোডাউন ও উল্লাস করলে স্থানীয় গ্রামবাসীরা ভীত হয়ে পড়েন। এলাকায় মোটরসাইকেল শোডাউন করে আতঙ্ক তৈরি করেছেন সোহেলসহ তার লোকজন। তবে ফেইসবুকে সোহেল নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।”
Leave a Reply