চৌকশ এই পুলিশ কর্মকর্তা সিলেট মহানগরীতে অসংখ্য ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করেছেন এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য :
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী মাহিদ আল সালাম হত্যারহস্য উদঘাটন-
শাহজালাল বজ্ঞিান ও প্রযুক্তি বশ্বিবদ্যিালয়রে সাবকে শক্ষার্থী মাহদি আল সালাম (২৮) গত ২০১৮ সালের ২৬শে মার্চ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ক্বিনব্রিজের চাঁদনীঘাট পয়েন্টে অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। দক্ষণি সুরমা থানায় এনিয়ে মামলা হয়। মামলা নং-১৪।
হৃদয় বিদারক এই ঘটনার প্রতিবাদে শাবপ্রিবিসহ সিলেটের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা অপরাধীদরে গ্রেফতারের দাবিতে শহরের গুরুত্বর্পূণ পয়েন্টে অবস্থান র্ধমঘট, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলনমূলক পদক্ষপে গ্রহণ করে।
ক্লুলেস এই খুনরে রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারে মোবাইলে ধারণকৃত একটি রিকশার ছবির সূত্র ধরে মাহদিকে বহনকারী রিকশাচালককে খুঁজে বরে করনে এডিসি জ্যোতর্মিয় সরকার। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত কুখ্যাত ছিনতাইকারী মির্জা আতিক, তায়েফ মোঃ রিপন, লন্ডনী শাকিল, রাসেল গংদের গ্রেফতার করেন এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও লুণ্ঠিত মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন।
উল্লেখ্য, দুর্ধর্ষ মির্জা আতিক দক্ষিণ সুরমা থানার মামলা নং জি.আর ২৯/১৪ ধারাঃ আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার আইন) ২০০২, (সংশোধনী ২০১২) এর ৪ ধারা মামলায় ইতোমধ্যে ০৫ বছরের সাজা ভোগ করেছে।
অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের উপর জঙ্গি হামলা-
২০১৮ সালের ৩ মার্চ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশ বরেণ্য অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক জঙ্গি যুবক অতর্কিত ছুরি নিয়ে প্রাণঘাতী হামলা চালায়। এনিয়ে জালালাবাদ থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নং-৩।
ঘটনার পরপরই এডিসি নর্থের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জ্যোতির্ময় সরকার তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের সুচিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং হামলাকারী জঙ্গি যুবক ফয়জুর রহমানকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের গণপিটুণি থেকে সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার সহিত উদ্ধারপুর্বক পুলিশি হেফাজতে নিয়ে আসেন।
আসামী ফয়জুলের জবানবন্দি অনুসারে তাঁর অপরাপর সহযোগী সোহাগ মিয়া, মাওলানা আতিকুর রহমান, মিনারা বেগম, ফজলুর রহমান, এনামুল হাসান গংদের গ্রেফতার এবং আসামীর ব্যবহৃত ল্যাপটপ, কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
সেনা সদস্যের ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার ও ছিনতাইকারী গ্রেফতার-
২০১৮ সালের ৭ই মে সিলেট সেনাবাহিনীতে কর্মরত ল্যান্স কর্পোরাল মোঃ ময়নুল ইসলাম শাহপরান থানাধীন মুরাদপুর এলাকায় সিএনজিযোগে পৌঁছলে দুটি মোটর সাইকেলে ৫ জন ছিনতাইকারী নগদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এনিয়ে শাহপরান থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নং-১৪।
এ ঘটনায় সেনাবাহিনী, পুলিশ প্রশাসনসহ জনমনে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পার্শ্ববর্ণিত কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি চৌকশ টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী নাসির উদ্দিন, শফিকুল ইসলাম, রাহেল আহম্মদ, মোঃ মুক্তার হোসেন ও মোঃ দিলোয়ার হোসেন আলম গংদের গ্রেফতার এবং লুণ্ঠিত ২৭ হাজার ৫শ টাকা ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল উদ্ধার করেন। গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারী নাসির ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামী ছিলো।
চাঞ্চল্যকর তাসিন হত্যারহস্য উদঘাটন-
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের ১৬ শাহপরান থানাধীন শিবগঞ্জে মশিউর রহমান তাসিন (১৮) দুষ্কৃতিকারীদের ছুরিকাঘাতে খুন হয়। এনিয়ে নিহত তাসিনের বাবা ৮ জনকে আসামী করে শাহপরান থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নং-১৮।
গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ফলে উক্ত খুনের ঘটনায় এজাহারনামীয় শুধু ১ জন আসামী জড়িত ছিল মর্মে তদন্তে প্রকাশ পায় এবং এজাহারে উল্লেখিত ৭ জন নিরীহ ব্যক্তি হত্যা মামলার দায় হতে অব্যাহতি পায়।
মোগলাবাজারে আছিয়া খাতুন হত্যা, আসামী গ্রেফতার-
২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মোগলাবাজার থানাধীন হরগৌরী গ্রামের প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতিকালে নৃশংসভাবে খুন হন কেয়ারটেকার আছিয়া খাতুন (৩৫)। এ নিয়ে মোগলাবাজার থানার মামলা করা হয়। মামলা নং-৮।
লোমহর্ষক ও চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতারে পার্শ্ববর্ণিত কর্মকর্তা অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন। ঘটনার সাথে জড়িত গ্রেফতারকৃত আসামী আবদুল বাছিত, আবদুল্লাহ আল মাহদী, কামিল আহমদ তাজমুল, মোঃ সুমন আহমেদ বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামীদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত একটি মোবাইলফোন ও মালামাল উদ্ধার করা হয়।
আরামবাগ এলাকার একটি বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি-
২০১৮ সালের ১৮ মার্চ শাহপরান থানাধীন আরামবাগ এলাকার ৪১নং বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। এ ঘটনায় জড়িত ডাকাতদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য- আল আমিন ওরফে পিচ্চি রুহেল (বিরুদ্ধে ৬টি ডাকাতি মামলা বিচারাধীন), আরিফুল ইসলাম সজীব ওরফে মিরাজ ডাকাত (বিরুদ্ধে ৫টি মামলা বিচারাধীন), মোঃ ইউনুছ হাওলাদার ওরফে বস কালু (বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা বিচারাধীন)-কে গত ৫ মে নারায়নগঞ্জ হতে এবং মিজান হাওলাদার ওরফে বস মিজান (বিরুদ্ধে ৮ টি মামলা বিচারাধীন)-কে চট্টগ্রাম থেকে গত ২৬শে মে গ্রেফতার করেন।
উপশহরে দুর্ধর্ষ ছিনতাই, লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধার-
২০১৮ সালের ১৪ মে কবির হোসেন ব্যাংক থেকে ৬০ হাজার টাকা উত্তোলনপূর্বক সিএনজিযোগে উপশহর এলাকায় পৌঁছালে একদল অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারী অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়। বিষয়টি উপস্থিত লোকজনের মাধ্যমে অবগত হয়ে এই এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ টহল পার্টিকে নিয়ে তাৎক্ষনিক অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইকারী মোঃ কামরান মিয়া(৪০), আজিজুর রহমান প্রকাশ আজিম (৪৮), মোঃ হোসেন(২২), নাইম আহমেদ (২০)-দের গ্রেফতার করেন এবং লুণ্ঠিত ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করেন। এনিয়ে শাহপরান থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নং-৬।
আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সেবা সপ্তাহ-২০১৯ উপলক্ষে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে পদক তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Leave a Reply