শেখ মোঃ হারুনুর রশিদ।। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে দ্বিতীয় দিনের মত ক্যাপ ফাউন্ডেশনের সৌজন্যে আবারও শতাধিক পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি,চুনারুঘাট তথা হবিগঞ্জের কৃতি সন্তান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের আলোচিত ও সবার সুপরিচিত ব্যক্তি
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।শুক্রবার(৩ এপ্রিল)সকাল ১১ টায় পৌরশহরের নিজ বাসার সামনে এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন তিনি।এসময় উপস্থিত ছিলেন এই দুর্যোগময় সময়ে সবসময় জনতার পাশে থাকা বাংলাদেশ পুলিশের চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ নাজমুল হক,এসআই জাহাঙ্গীর আলম,ক্যাপ কর্তৃপক্ষ ও সাংবাদিক মাহমুদুল হক সুজন প্রমূখ।
ব্যারিস্টার সুমন পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন,কার দায়িত্ব কে পালন করছে।তিনি বলেন বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে থরথর করে কাপছে বিশ্ববাসী।এর থাবা থেকে বাদ পড়েনি বাংলাদেশ ও।বর্তমান এই ভয়াবহ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যেখানে দেশবাসীর পাশে সার্বক্ষনিক ডাক্তার থাকার কথা সেখানে কিছু কিছু এলাকায় ডাক্তাররা তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন না করে করোনাভাইরাসের ভয়ে স্বাভাবিক রোগিদেরকেও সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। অথচ পুলিশ কোনো ইকুইপম্যান্ট ছাড়াই শুধু মাস্ক পড়ে এই মহামারি দুর্যোগ মোকাবিলায় জণগনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।এমন কি করোনায় মারা যাওয়া একটি লাশের জানাযা শেষে দাফনকার্য ও সম্পন্ন করেছে পুলিশ।তিনি সামাজিক দূরত্ব বজায় ও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে সার্বক্ষনিক মাঠে কাজ করা সশস্ত্রবাহিনী,পুলিশের আইজিপি,পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ দেশের সকল পুলিশ সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানান এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এদিকে ওসি শেখ নাজমুল হক বলেন,যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় জীবন বাজি রেখে হলেও ও দেশবাসীর পাশে দাড়ানোর শপথ নিয়েই আমরা চাকুরিতে যোগদান করেছি। তিনি বলেন,মানবসেবায় আমরা ছিলাম,আছি এবং থাকবো।মানবের তরে আমাদের জীবন উৎসর্গ করে দিতে সামান্যতম কৃপনতা ও আমরা করবোনা।এই দুর্যোগকে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সাথে তুলনা করে বলেছেন,এটা বেঁচে থাকার একটি যুদ্ধ,এই যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে।তিনি আরো বলেন,কোনো ব্যক্তি যদি কল দিয়ে বলে তাদের বাসায় খাবার নেই তাহলে তাঁর বাসায় খাবার পৌঁছে দিবো।তবুও জরুরী প্রয়োজন ছাড়া সবাইকে ঘরের বাহিরে যেতে নিষেধ করেছেন।বার বার সবাইকে ঘরে থাকার কথা বলেছেন ওসি।
তিনি আরো বলেন,আমাদের সমাজপতিরা যখন এই দুর্দিনে সমাজের মানুষের জন্য কিছু দিতে ব্যর্থ, ব্যারিস্টার সুমন সেখানে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে প্রমান করেছেন তিনি কত উদার মনের মানুষ। এ জন্যই উনাকে দেশের মানুষ মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, যে যার যায়গা থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী খেটে খাওয়া অসহায়দের পাশে এই দুর্দিনে এগিয়ে আসলে তাদের কষ্ট লাঘব করা যাবে।সবাই মিলে কাজ করলে দেশকে ভালো একটা অবস্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, লন্ডনেও যখন শতশত মানুষ মারা যাচ্ছে, যারা ইউএসে বসবাস করছেন তারাও দেখছেন শতশত মানুষ মারা যাচ্ছে। তারপরও তারা কিন্তু নিজের দেশকে ভুলে নাই। কোন মানসিকতায় কোন বাস্তবতায় তারা মানুষকে সাহায্য করতে এসেছেন। তারা প্রতিদিন শতশত মানুষকে সহযোগিতা করছেন। আজ আমার বাসার সামনে ১০০ মানুষকে সাহায্য করার জন্য এসেছেন। আমার সৌভাগ্য। আমি তাদের শুভেচ্ছা জানাই। আমরা লকডাউনের কারণে কয়েকজনকে মাত্র দিয়ে বাকি প্যাকেট বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেব।
করোনার মধ্যে যাদের আয় নেই, গরিব অসহায় আছেন তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য দেশের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যেখানে সারা বিশ্বে শতশত মানুষ মারা যাচ্ছে, আসুন সবাই মিলে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। এখনই দেশের জন্যে মানুষের জন্যে যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সময়, দেশপ্রেমিক হওয়ার সময়।
বিশ্বে করোনা মোকাবিলায় এখন একটা যুদ্ধ চলছে। যেখানে সারা পৃথিবী যুদ্ধের মধ্যে,আমরা সবাই মিলে যদি ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি। আমার বিশ্বাস, ভাইরাসে আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না।
বাঁচতে হলে সবাইকে নিয়ে যুদ্ধ করে বাঁচব। আর যদি মরে যায় শহীদের মর্যাদা নিয়ে মরতে চাই। ইসলামে এমন কথা বলা আছে। দেশে এখন খুব দুঃসময় চলছে। বাংলাদেশের সকল ধনী ব্যক্তিরা সাহায্য দেয়া উচিত। তারা বিদেশে অবস্থান করেও দেশের কথা দেশের মানুষের সেবার দায়িত্ব নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
বিতরণকৃত খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৫ কেজি চাউল,৩ কেজি চিড়া, ৩ কেজি ডাল, ২ কেজি তৈল, ২ কেজি ছানা , ১ কেজি চিনি, ১ কেজি লবন, ২টি সাবান,হলুদের গুড়াসহ বিভিন্ন ধরনের মশলা।
উল্লেখ্য,লন্ডনস্থ সিলেট প্রবাসীদের “ক্যাপ ফাউন্ডেশন”এর উদ্যোগে গতকাল চুনারুঘাট শতাধিক দরিদ্রদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরন করা হয়।দ্বিতীয় দিনের মত আজ ও আরো শতাধিক অসহায়দের মাঝে উল্লেখিত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
Leave a Reply