নুর উদ্দিন সুমন : হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলায় এক স্কুল শিক্ষকের মৃত্যুর সাড়ে তিন মাস পর পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার ইটাখোলা কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিক মন্ডলের উপস্থিতিতে এ লাশ উত্তোলন করেন পিবিআই ইন্সপেক্টর শরিফ মো: রেজাউল,করিম । মৃত ব্যক্তি ইটাখোলা গ্রামের হেফজুর রহমান মাষ্টারের ছেলে সাইফুর রহমান মোর্শেদ(৩০) সে খড়কী প্রাইমারী স্কুলের খন্ডকালীন শিক্ষক ছিল । গত ৮জুন সাইফুর রহমান মোর্শেদের লাশ গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ইটাখোলা গ্রামে তার বসত ঘর থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরন করে মাধবপুর থানা পুলিশ । কিন্তু সুরতহাল রিপোর্ট গড়মিলের কারণে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে অধিকতর তদন্তের জন্য পুনরায় তার লাশ উত্তোলন করা হয়। জানা যায়, ঘটনারদিন মৃত সাইফুর রহমান মোর্শেদের বড় ভাই শফিকুর রহমান শামীম মাধবপুর থানায় মোর্শেদকে হত্যার অভিযোগ তুলে স্ত্রী হাসিনা বেগম হাাঁসিকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মাধবপুর থানার মামলা নং ১১ । মামলার পর পুলিশ হাসিনা বেগম হাাঁসিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে । এর পর,মামলাটি পিবিআই তদন্ত শুরু করেন । মামলার দতন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর শরিফ মোঃ রেজাউল করিম জানান, প্রায় দুই মাস পূর্বে তিনি এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান । সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত রিপোর্টে গরমিল থাকায় বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে পুনরায় লাশ উত্তোলন করা হয়েছে । মামলার বাদী শফিকুর রহমান শামীম জানান, অনুমান ১০ বছর পূর্বে ভালবেসে একই উপজেলার খড়কী গ্রামের আব্দুস সহিদের মেয়ে হাসিনা বেগম হাঁসিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে ফাতেমা নামের ৭ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে । বিয়ের পর থেকেই আলাদা বসবাস করছিল দম্পতি । মোর্শেদ ও হাঁসির মধ্যে বনিবনা ছিল না । হাঁসি কমিউনিটি হেলথ মাঠকর্মী খড়কী শাখায় চাকুরী করতো । নিহতর ভাই শফিকুর রহমান শামীমের দাবী পরকীয়া প্রেমের কারনে মোশেদকে হত্যা করে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে লাশের গলায় ফাঁসি দিয়ে ঘরের তীরের সাথে ঝুলানো হয়েছে । এ বিষয় তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন । শামীম আরও বলেন, মাধবপুর থানার এস আই মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ গাজী প্রস্তুতকৃত সাইফুর রহমান মোর্শেদের মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্টে ঠোটে, পিটে, পেটে, পায়ের আঙ্গুল থেতলানো পুরুষাঙ্গ থেতলানো ও ফুলা , দুই বগল থেতলানো ও ফুলা , কোমর হতে পা পর্যন্ত শরীর থেতলানো ও চামড়া উঠানো সহ বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন থাকলেও ময়না তদন্ত রিপোর্টে কিছুই নেই । ময়না তদন্ত রিপোর্ট আর সুরতহাল রিপোর্টে ব্যাপক গরমিল রয়েছে । ময়না তদন্তে প্রকৃত ও সত্যগোপন করা হয়েছে তাই তিনি পুনরায় ময়নাতদন্ত দাবী করে আদালতে আবেদন করেন। অবেশেষে আদালতের আদেশে পুনরায় কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে । এদিকে হাসিনা এখনও কারাগারে রয়েছে।
Leave a Reply