শেখ জাহান রনি, মাধবপুর : পৃথিবীতে করোনার প্রভাব বেড়েই চলছে এই করোনার প্রভাবে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলায় চলমান করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া গরীব অসহায় বেদে পল্লীর মানুষরা না খেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
রবিবার ১৯ এপ্রিল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাধবপুর-মনতলা সড়কের পাশে নোয়াগাও পৌর ৯নং ওয়ার্ড এবং মাধবপুর থানার দক্ষিণ পাশে সোনাই নদীর পাড়ে এলাকায় এই বেদে পল্লী অবস্থিত। এখানে ১২০ পরিবারের প্রায় সাড়ে ৭ লোক বসবাস করে। তারা বিগত ২০ বছর আগ থেকে এখানে বসবাস করছেন। তাদের এখানে পুরুষ মহিলা সবাই যে যার মত কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কেউ সাপের নাচ দেখিয়ে সংসার চালান, কেউ সাপ ধরে সংসার চালান, কেউ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিংঙ্গা দিয়ে রোগের চিকিৎসা করেন, আবার কেউ দোকান করেন। তাদের সকলের প্রতিদিন যা আয় হবে তা দিয়ে কোন মতে সংসার চালান। আজ দুপুরে বেদে পল্লীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। উক্ত প্রতিবেদককে দেখে বেদে পল্লীর বৃদ্ধ নারী-পুরুষ ছোট ছোট শিশু সবাই দোঁড়ে এসে আমাকে গিরে ধরে দু’হাত পেতে বলেন ভাইয়া আমাদের খাদ্য দেন আমরা এখানে ১২০ পরিবার আছি। তাদের এই অসহায়ত্ব,অভাব অনটনের আত্বচিৎকার দেখে আমার চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না। আমি সকলকে শান্ত হতে বললাম।
এসময় বেদে সর্দার মো: নুরুল হক আমাকে জানান, করোনার প্রভাব পরার পরে সরকার বাংলাদেশের সকল এলাকা লকডাউন করে দেয়। লকডাউনের পর থেকে কেউ সাহায্য সহযোগিতা করছে না। আজ বেশ কয়েকদিন আমরা না খেয়ে মরতে বসেছি। আমাদের বেদে পল্লীতে ৭শ লোক বাস করে। এখন আমরা সবাই বেকার কোন কর্ম নেই। এ পর্যন্ত কোন এমপি, চেয়ারম্যান ,মেম্বার কেউ খবর নেয়নি, সহযোগিতা ও করছেনা। ১১ দিন আগে ৮/৪/২০২০ সহকারি কমিশনার (ভূমি) আয়েশা আক্তার ম্যাডাম এসে কিছু চাল দিয়ে গেছে। এর পর আর কেউ খবর রাখেনি। আমরা রুজি করতে পারলে খাই না করতে পারলে খাইনা।
তিনি আরও জানান, সরকার ও সমাজের বড়লোকদের কাছে আমাদের আবেদন আমাদেরকে কিছু সাহায্য করুন না হয় আমরা মরার পথে আছি।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আয়েশা আক্তার জানান, ওই বেদে পরিবারদের মাধবপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭০টি ব্যাগ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছিল ৮/৪/২০২০। আমরা ওই বেদে পল্লীতে আরও কিছু খাদ্যসামগ্রী দেয়া চেষ্টা করে যাচ্ছি।
Leave a Reply