ডেস্ক নিউজঃ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ‘প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে প্রত্যাখ্যান করায় বখাটে জুয়েল আহমদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত স্কুল ছাত্রী মায়মুনা আক্তার সামিরার জ্ঞান ফিরছে না। তাঁর অবস্থা এখনো সঙ্কটাপন্ন। সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সামিরার পাশে থাকা তার চাচা মো. সামছুদ্দিন এসব জানান।
তিনি জানান, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সামিরার অস্ত্রপাচার করা হয়েছে। তাঁর শরীরের মাথায় ১৪টি সেলাই, ডান কানে ৫টি সেলাই, পায়ের হাঁটুর নিচে আরো ১৫-২০টি সেলাই দিয়ে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। ওসমানী হাসপাতালের নিউরো সার্জারী বিভাগের প্রধান ডা. মো. রাশদিুন্নবী খাঁন এর তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে।
তিনি আরও জানান, গতকাল শনিবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত তার জ্ঞান পুরোপুরি ফিরছে না। মাঝে মধ্যে চোখ দিয়ে তাকাচ্ছে আবার জ্ঞান হারাচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের এখনো আশ্বস্ত করতে পারছেন না কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দাবি সামছুদ্দিনের।
এদিকে আহত স্কুলছাত্রী সামিরাকে দেখতে রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকালে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে যান মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মো. শাহজালাল।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর এলাকায় সামিরার ছোট বোনের সামনে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে বখাটে জুয়েল। এ সময় স্থানীয় লোকজন বখাটেকে ধরে গণ-পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। বখাটে জুয়েল মীরশংকর গ্রামের মৎস্যজীবী বকুল মিয়ার ছেলে। আহত স্কুলছাত্রী মায়মুনা জান্নাত ছামিরা উপজেলার ভূকশমিইল ইউনয়িনরে মীরশংকর গ্রামরে বাসন্দিা আরব আমরিাত প্রবাসী সরাফ উদ্দিনের বড় ময়ে। সে উপজলোর আল-হেরা ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সামিরা স্কুলে যাওয়া-আসার সময় প্রায়শই জুয়েল তার পথ আটকিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দিত। সর্বশেষ গত শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ছামিরা ও তার ছোট বোন মনিরা স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় মীরশংকর এলাকায় অপেক্ষমাণ জুয়েল তাকে প্রেম নিবেদন করে। এতে সামিরা রাজি না হলে সে তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছামিরার মাথায়, হাতে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। সামিরার চিৎকারে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে বখাটে জুয়েলকে আটক করে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
স্বজনরা সামিরাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা গুরুতর দেখে চিকিৎসকরা দ্রুত তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
সামিরার পরিবার জানায়, দুই-আড়াই বছর আগে স্থানীয় সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ও সামিরাকে উত্ত্যক্ত করত একই স্কুলের ছাত্র জুয়েল। ওই সময় তার অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেলে এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষকদের নিয়ে সালিস বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে জুয়েল মুচলেকা দিয়ে রেহাই পায়। এরপর মেয়েটির নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তার মা-বাবা ওই স্কুল থেকে তাকে বদলি করে কুলাউড়া আল-হেরা ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করান।
কুলাউড়া থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান জানান, হামলার ঘটনায় স্কুলছাত্রী সামিরার মা সাহারা বেগম বাদী হয়ে জুয়েল আহমদকে আসামি করে কুলাউড়া থানায় একটি হত্যা চেষ্ঠা মামলা দায়ের করেছেন। বখাটে জুয়েলকে আটক করে রোববার দুপুরে মৌলভীবাজার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply