নুর উদ্দিন সুমন।। হবিগঞ্জের গর্ব জনপ্রিয় ক্রিকেট খেলোয়াড় নাজমুল হোসেন ৩১ বছর বয়সে ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানালেন নাজমুল হোসেন। দেশের হয়ে ২টি টেস্ট, ৩৮টি ওয়ানডে ও ৪টি টি-টুয়েন্টি খেলা নাজমুল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫০ উইকেটের মালিক। নাজমুল এবারের ঢাকা লীগে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করছেন, অবসরের পর এবার পুরোদমে কোচিং ক্যারিয়ার গড়ায় মন দেয়ার ইচ্ছা তাঁর।
২০০৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের অল্প কিছুদিন পর জাতীয় দলে এসেছিলেন নাজমুল। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। মাত্র তিনটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন তিনি। অভিষেক ম্যাচে ২৬ ওভার বল করে ১১৪ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু ইনজুরির কারণে টেস্ট ক্যারিয়ার দীর্ঘ হয় নি নাজমুলের। ওয়ানডে বোলার হিসেবেই জাতীয় দলের বিবেচনা ছিলেন তিনি। ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় তাঁর, মাশরাফি বিন মুর্তজার ইনজুরিতে কপাল খুলে নাজমুলের।
ইনজুরি সমস্যা ছিল নাজমুলেরও। ইনজুরির সাথে লড়াই করে ওয়ানডে খেলে গেলেও টেস্ট খেলার সুযোগ পান নি বললেই চলে। প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে সময় লেগেছে ৭ বছর।
ইনজুরির সাথে ক্রমাগত যুদ্ধ করে গেলেও ছোট ক্যারিয়ারে বেশ কিছু স্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী ছিলেন নাজমুল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে জয়, ২০০৫ সালে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়, যার সাক্ষী ছিলেন তিনি।
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বিধ্বংসী বোলিং করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ ১৫১ রানে অল আউট হলেও শ্রীলংকাকে ৬ রানেই ৫ উইকেটের দলে পরিণত করেন তিনি। ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে ৫ উইকেট হারানোর ঘটনার নায়ক ছিলেন নাজমুল। প্রথম স্পেল শেষে নাজমুলের বোলিং ফিগার ছিলো, ৪-৩-১-৩।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজেও দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন নাজমুল। ইনজুরির কারণে ফের দলের বাইরে গেলেও ২০১২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে ক্রিকেটে ফিরেন তিনি। একই বছর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জনের সাক্ষী হন নাজমুল।
২০১২’র এশিয়া কাপ জুড়ে দারুণ ধারবাহিকতায় বল করে বাংলাদেশকে ফাইনালে তুলতে সাহায্য করেন নাজমুল। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ৩২ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাকি বোলারদের কাজ সহজ করে দেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচটি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলে ফেলেন নাজমুল। ৮ ওভার বল করে ৩৬ রান খরচায় এক উইকেট নেন তিনি।
২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে দলে ফিরলেও অনুশীলনে ইনজুরির শিকার হয়ে ছিটকে পড়েন নাজমুল। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে গেলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বপ্ন ২০১৩ সালেই শেষ হয়ে যায় নাজমুলের।
Leave a Reply