বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ অপরাহ্ন

সুতাং নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশ

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০২২
  • ১৮৬ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার:– হবিগঞ্জের সুতাং নদীদূষণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর পরিবেশ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশ দিয়েছেন হবিগঞ্জ স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসাইন এ আদেশ প্রদান করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্টেনো টাইপিস্ট মোতাহার হোসেন।

এর আগে গত ১২ ও ১৩ মার্চ “সুতাং নদী এখন ২০০ গ্রামবাসীর অভিশাপ” শিরোনামে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে বিষয়টি আদালতের নজরে আসে।

সোমবার হবিগঞ্জ স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসাইন বিষয়টি আমলে নিয়ে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রয়োজনীয় তদন্ত করে নিয়মিত মামলা করার জন্য হবিগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন।

আদেশে বলা হয়, ‘সংবাদ বিশ্লেষণে দেখা যায় যে হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ, সদর ও লাখাই উপজেলাধীন ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ সুতাং স্থানীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। বর্তমানে শিল্পবর্জ্যের বিষাক্ত গ্যাস ও দূষিত পানি প্রবাহিত হয়ে নদীটি মারাত্মকভাবে দূষণের শিকার।’

আরো বলা হয়, ‘সংবাদে প্রকাশিত অভিযোগ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ধারা ২(কক), (ককক), (খ), (ঙ) ও (ঠ)-এর সংজ্ঞামতে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ও বিধি ১৯৯৭ মোতাবেক প্রয়োগযোগ্য। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ধারা ৬ঙ, ৭, ৮ ও ধারা ১৫-এর টেবিল ৮ মোতাবেক আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অনুসন্ধান বিষয়ে আদালত জানান, ‘প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর, হবিগঞ্জ জেলা কর্তৃক ইতোমধ্যে কোনো মামলা করা হয়নি। সরকার পরিবেশ আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ আদালত আইন-২০১০ প্রণয়নের মাধ্যমে স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রতিষ্ঠা করেছে।

এ অবস্থায় জনস্বার্থে ও পরিবেশ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে সংবাদে বর্ণিত হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ, সদর ও লাখাই উপজেলাধীন সুতাং নদীর দূষণ ও দূষণের উৎস নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা প্রয়োজন।’

শিল্পকারখানার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেন, ‘নদীর আশপাশে স্থাপিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ও বিধিমালা ১৯৯৭ মোতাবেক কোনো আইন লঙ্ঘন হচ্ছে কি না এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে নির্গত বর্জ্য দ্বারা সুতাং নদী দূষিত হচ্ছে কি না, এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে অপরাধ উদঘাটন ও আসামিদের চিহ্নিতকরণ এবং উল্লিখিত ধারায় অপরাধ ছাড়াও অন্য কোনো আইনে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না, তা বিস্তারিত তদন্ত করার প্রয়োজনীয়তা প্রতীয়মান হয়।’

‘আদেশে উল্লেখিত সংবাদ ঈড়ফব ড়ভ ঈৎরসরহধষ চৎড়পবফঁৎব, ১৮৯৮-এর ১৯০(১)(সি) ধারায় সংবাদটি আমলে নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের পরিদর্শক পদপর্যাদার একজন কর্মকর্তা দিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে বিস্তারিত প্রতিবেদন আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

তদন্তকালে অপরাধ উদঘাটিত হলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ও বিধিমালা ১৯৯৭ অনুযায়ী নিয়মিত মামলার নির্দেশ প্রদান করা হলো। সংশ্লিষ্ট সংবাদের প্রিন্ট কপি মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করা হোক। আদেশের কপি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রদান করা হোক।’

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান জানান,আদালতের আদেশের কপি এখনো হাতে পাইনি। আদেশের কপি হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com