প্রথম সেবা ডেস্কঃ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার হূদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে, যার একটি স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে চিকিত্সকরা অপসারণ করেছেন। এখন হেমোডাইনামিক্যালি স্টেবল আছেন। ভেন্টিলেটর (কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস) ও আইএবিপি এই দুটি মেশিনের মাধ্যমে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। লাইফ সাপোর্টে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তিনি রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। চোখ খুলছেন, পা নাড়াতে পারলেও এখনো শঙ্কামুক্ত নন বলে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) ডি ব্লকের দোতলায় কার্ডিওলজি বিভাগে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিত্সাধীন ওবায়দুল কাদেরকে উন্নত চিকিত্সার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তিন জন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকসহ সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এসেছে। চিকিত্সকদের অনুমতি মিললে সিঙ্গাপুর পাঠানো হবে। গতকাল সন্ধ্যায় বিএসএমএমইউয়ের ডা. মিল্টন হলে ওবায়দুল কাদেরের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া এবং কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসান বলেন, ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও তিনি শংকামুক্ত নন। বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতিতে তাকে বিদেশে নেয়ার মতো অবস্থা নেই। তবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যদি প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক থাকেন তাহলে নেয়া যেতে পারে। সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা যদি দায়িত্ব নিয়ে তাকে নিতে চান আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না।’
এদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সিঙ্গাপুরের চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সাড়ে ৭টায় সেখান থেকে তারা বিএসএমএমইউয়ের উদ্দেশে রওনা হন। রাত ৮টায় বিএসএমএমইউয়ে পৌঁছান। পরে সেখানে দেশ-বিদেশি চিকিত্সকরা বৈঠকে বসেন। প্রায় এক ঘণ্টা তার চিকিত্সার বিষয় নিয়ে উভয় দেশের চিকিত্সকদের মধ্যে মতবিনিময় হয়। তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে উভয় দেশের চিকিত্সকরা একমত হন। বাংলাদেশের চিকিত্সকরা তার চিকিত্সার সার্ভিক বিষয় তুলে ধরেন। বিদেশি চিকিত্সকরা বলেন, এই অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া কিছুটা ঝুঁকি আছে। এদিকে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতি দিকে আছে। রাত ৯টার দিকে তিনি পানি চেয়েছেন বলে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন। উভয় দেশের চিকিত্সকদের মতামত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এই উন্নতির জন্য বাংলাদেশের চিকিত্সকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। যেহেতু এই অবস্থায় এই মুহূর্তে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশে নেওয়া সম্ভব নয়, আজ সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদেশি চার চিকিত্সককে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সসহ অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এই সময় পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবেন। এই সময়ের মধ্যে তার অবস্থার যদি আরো উন্নতি হয় এবং এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যেতে ঝুঁকি না থাকলে ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। ভিসি ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, আপাতত ওবায়দুল কাদেরকে বিদেশ পাঠানো হচ্ছে না। উভয় দেশের চিকিত্সকদের মধ্যে ওবায়দুল কাদেরের জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসান, অধ্যাপক ডা. সজল ব্যানাজী, অধ্যাপক ডা. অসিত বরণ অধিকারী, অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান, অধ্যাপক ডা. লূত্ফুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কয়েক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের রবিবার রাত ৩টায় প্রথমে হার্ট অ্যাটাক করেন। এ সময় তার বাসা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগে খবর পাঠানো হয়। এ সময় একজন কার্ডিওলজিস্ট চিকিত্সক তার বাসায় যান। ভোরে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহকে ফোনে অবহিত করা হয়। এ সময় ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। সকাল ৭টায় ওবায়দুল কাদেরকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে তার হার্ট অ্যাটাক হয় আবার। পরে হাসপাতালের সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসানের অধীনে তার চিকিত্সা শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে সর্বস্তরের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার শরীরে তেমন কোনও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। ইসিজি করতে করতে তার অবস্থা খরাপ হতে থাকে। তখন চিকিত্সকরা এনজিওগ্রাম করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে সিটি স্ক্যান করা হয়। রক্তচাপ কিছুটা স্থিতিশীল হলে করা হয় এনজিওগ্রাম। এনজিওগ্রাম করে তার তিনটি রক্তনালীতে ব্লক পাওয়া যায়। আগে থেকে ডায়াবেটিসে তার অবস্থা খারাপ ছিল। যে তিনটি ব্লক পাওয়া যায় তা ক্রিটিক্যাল। এগুলোর একটি ১০০ ভাগ, একটি ৯৯ ও একটি ৮০ ভাগ ব্লক। এর মধ্যে ৮০ ভাগের ব্লকটিতে রিং পরানো হয়েছে। অন্যদুটি ব্লক রয়েছে। রিং পরানোর পর দুই ঘণ্টা তার অবস্থা ভালোই ছিল। তারপর থেকে অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকে। ব্লাড প্রেসার কমে যেতে থাকে এবং ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালান্স হয়ে যেতে থাকে। তিনি চোখ খোলেন না এবং কথা বলেন না। ক্রিটিক্যাল স্টেজে চলে যান। এরপর তাকে আইএবিপি যন্ত্র দেওয়া হয়। হেমোডাইনামিক স্ট্যাবিলিটি আমলে নিয়ে তাকে পরবর্তী থেরাপি বা বাইপাস সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পার না হওয়া পর্যন্ত তার ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না বলে জানান ডা. সৈয়দ আলী আহসান। সব চিকিত্সকই আন্তরিকতার সঙ্গে সর্বোচ্চ চিকিত্সা সেবা প্রদান করছেন। এদিকে ওবায়দুল কাদের দীর্ঘদিন ধরে অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ’র কাছ থেকে চিকিত্সা সেবা নিচ্ছিলেন। নির্বাচনের আগে ও পরে তার ব্লাড সুগার ছিল ৩২। এই অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরমর্শ দিয়েছিলেন ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। কিন্তু ওবায়দুল কাদের তার পরামর্শ শুনেননি। গতকালও সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের মাথা নাড়িয়ে যেতে চান না বলে জানিয়েছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও ডা. সৈয়দ আলী আহসান বলেন, আমরা ওবায়দুল কাদেরের অবস্থা নিয়ে আশাবাদী। হয়তো তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। আবার নাও হতে পারেন। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা না পেরোলে অবস্থা সঠিকভাবে বলা সম্ভবই না। সকালে যখন তিনি হাসপাতালে আসেন তখন তার হার্টবিট বা হূস্পন্দন বন্ধ ছিল। সে সময় থেকে এখন পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। তাই আমরা আশাবাদী। ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, চিকিত্সা সেবার স্থার্থে এখন হাসপাতালে ভিড় না করাই ভাল। কারণ এতে ইনফেশকশন হয়ে অবস্থার অবনতি হতে পারে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালে ভিড় না করার নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, যদি আমিও আসি তাহলেও ঢুকতে দিবেন না। বিএসএমএমইউ উপাচার্য জানান, ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে খানিকটা উন্নতির দিকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসে ডাক দেওয়ার পর তার (কাদের) চোখের পাতা মিটমিট করছিল। আর রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এসে ডাক দেওয়ার পর তিনি চোখ বড় করে তাকিয়েছিলেন। সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এসে ডাক দেওয়ার পরও তিনি চোখ খুলেন। তিনি আরও বলেন, ‘কেউ ডাকলে তিনি রেসপন্স করছেন। তার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর এনজিওগ্রাম করে রিং পরানো হয়েছে। বন্ধ হওয়া নালী দিয়ে ফের রক্ত চলাচল শুরু হয়েছে। তার যে রিপার্কুইশন ইনজুরি হয়েছে, সেটা থেকে বের হতে সময় লাগবে।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বলেছেন, ‘চিকিত্সকরা যদি মনে করেন তাকে বিদেশে পাঠানো যায়, তবেই বিদেশে পাঠানো হবে। আর যদি চিকিত্সকরা মনে করেন বিদেশে পাঠানোর মতো অবস্থা তার নেই, তবে পাঠানো হবে না। আর যদি বিমানে ওঠার পর তার অবস্থার অবনতি হয় সেক্ষেত্রে সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো ইক্যুইপমেন্ট, এক্সপার্টিজ তাদের থাকে তবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে পাঠানো হবে, না হলে নয়।’ দুপুরে ওবায়দুল কাদেরের হার্টবিট ৩০- এ নেমে এসেছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ তখন ৩০-এ নেমে এসেছিল কিন্তু এখন ৯০ থেকে ১১০-এ উঠা-নামা করছে। আমরা তার সুস্থতার ব্যাপারে আশাবাদী।’ এসময় ওবায়দুল কাদেরের চিকিত্সা নির্বিঘ্ন করতে ও অন্যান্য রোগীর যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য বিএসএমএমইউয়ের ভেতর ভিড় না করতে সাংবাদিকসহ সব মহলের সহযোগিতা কামনা করেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য।
কার্ডিওলোজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. অসিত বরণ অধিকারী বলেন, ‘হার্ট এর রোগীর যে কোনও সময় ছন্দ পতন ঘটতে পারে। এ ক্ষেত্রে শরীরিক অবস্থা খারাপের দিকেও যেতে পারে।’ প্রসঙ্গত, বিএসএমএমইউ কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসানের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডে আরও রয়েছেন অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ চৌধুরী, অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত ভৌমিক, অধ্যাপক ডা. একেএম আক্তারুজ্জামান, কার্ডিও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রেজওয়ানুল হক, অধ্যাপক অসিত বরণ অধিকারী, জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান, ডা. তানিয়া সাজ্জাদ, প্রিভেনটিভ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক প্রমুখ। হাসপাতালে আছেন ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী ইশরাতুন্নেসা কাদের।
৬৭ বছর বয়সী ওবায়দুল কাদের ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার আগে ছয় বছর তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন কাদের। সেখান থেকেই তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কোম্পানীগঞ্জ থানা মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) অধিনায়ক ওবায়দুল কাদের প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। মোট চারবার তিনি নোয়াখালী-৫ আসনের ভোটারদের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে এসেছেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন পর সরকার গঠন করলে ওবায়দুল কাদেরকে যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেলে ২০০২ সালের সম্মেলনে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ন সরকারের সময়ে জরুরি অবস্থার মধ্যে দেশের বহু রাজনীতিবিদের মত ওবায়দুল কাদেরও গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। প্রায় ১৮ মাস কারাগারে কাটানোর পর ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের দুই মাস আগে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ। প্রথমে তাকে তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকারের মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করেন প্রধানমন্ত্রী। তখন থেকেই ওই মন্ত্রণালয়ের দেখভাল করছেন ওবায়দুল কাদের। বর্তমানে এ মন্ত্রণালয়ের নাম সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
কাদেরের রোগ মুক্তি কামনায় আওয়ামী লীগের মিলাদ মাহফিল
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক সুস্থ্যতা কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। রবিবার বিকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে ওবায়দুল কাদেরের সুস্থ্যতা কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। ওবায়দুল কাদেরের আশু রোগ মুক্তি কামনায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আজ সোমবার ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ দিনব্যাপি কোরআনখানি, বাদ আছর মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
আশু রোগমুক্তি কামনায় জেপি
জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আরোগ্য কামনা করে বিবৃতি প্রদান করেছেন। এক বিবৃতিতে জেপি’র নেতৃদ্বয় বলেন, ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযুদ্ধা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। আমরা তার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি এবং পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কছে এই প্রার্থনা করছি আবার যেন দেশবাসীর মাঝে তিনি সুস্থ শরীরে ফেরত আসতে পারেন। এদিকে জাতীয় পার্টি-জেপি’র সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম গতকাল অপরাহূে ওবায়দুল কাদেরকে দেখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে যান ও চিকিত্সকের কাছে তার চিকিত্সার খোঁজ খবর নেন এবং তার আশু রোগমুক্তি কামনা করেন।
সৌজন্যেঃ ইত্তেফাক
Leave a Reply