ইয়াছিন তন্ময়,মাধবপুর :-দশ মাস দশদিন গর্ভে ধারণ করা নাড়িছেঁড়া ধন ঝর্ণা কে হারিয়ে শোকে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন গর্ভধারিনী মা। মায়ের মায়া-মমতা মিথ্যে হয়ে যাওয়া ভাগ্যবিড়ম্বিত ঝর্ণার ৪বছরের অবুঝ শিশু কন্যা সানু ভয়াতুর চোখে তাকিয়ে থাকে আর মা মা করে চিৎকার করে।
এদিকে কন্যা কে হারিয়ে বাবা কেশব কুর্মী পাগল প্রায়। থমথমে হয়ে গেছে তার পরিবারের স্বাভাবিক জীবন-যাপন। ঝর্ণার শোকে তার আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু বান্ধব ও বাবার বাড়ি জগদীশপুর চা বাগানের মানুষের চোখে অশ্রু ভেঁজা কান্না ।
স্কুল শিক্ষিকা ঝর্ণা কুর্মী চাকুরী করতেন মাধবপুর উপজেলার বাকশাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয় শ্রীমঙ্গলের সোনাছড়া চা বাগানের বাসিন্দা সিউধনী কুর্মীর পুত্র ব্যাংক কর্মকর্তা সঞ্জয় কুর্মী সাথে।
বিয়ের এক বছর পর ঝর্ণার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান। ঝর্ণার ইচ্ছায় সন্তানের নাম রাখে সৃজিত কৃমী সানু। স্বামীর চাকুরীর সুবাদে ঝর্ণা এক বছর আগে বদলি হয়ে চলে যান তার শশুর বাড়ি শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চাতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এর পর শ্রীমঙ্গল শহরের সুরভীপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় স্বামীর সাথে বসবাস করতেন ঝর্ণা। অভিযোগ আছে ঝর্ণার স্বামী পরকীয়া প্রেমে আসক্ত ছিলেন সময়ে-অসময়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে অত্যাচার ও গালমন্দ করতেন। এরই জেরে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঝর্ণা হত্যা করে।
গত শুক্রবার (১৮মার্চ) দুপুরে সুরভীপাড়ায় বাসা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও আত্মীয়-স্বজন। এরপর ভাতিজী র সুখে কাতর চাচা রামপ্রসাদ কুর্মী শ্রীমঙ্গল থানায় ঝর্ণার স্বামী সঞ্জয় কুর্মীসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে সঞ্জয় কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় অন্য আসামীরা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। অশ্রুসিক্ত নয়নে ঝর্ণার চাচা ণারায়ন কুর্মী ভাতিজী হত্যার বিচার দাবি করে বলেন আমার ভাতিজি কে সঞ্জয় ও তার পরিবারের লোকজন পরিকল্পিত ভাবে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে বাসার ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে।
এই বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ শামীমউর রশীদ তালুকদার জানান ঝর্ণার স্বামী
সঞ্জয় কে আটকের পর কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামীরা পালাতক রয়েছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply