বুধবার (৩০ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে নবনির্বাচিত স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করতে তিনি নবনির্বাচিত স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছে। আর সংসদ স্পিকারকে নির্বাচিত করেছে।
সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে। সফল ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে এই সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে।
অধিবেশনে সরকারি ও বিরোধী দল উভয়েই জাতীয় সংসদকে প্রাণবন্ত ও কার্যকর করে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে। বিরোধী দলীয় নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের অনুপস্থিতিতে উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, সংসদকে প্রাণবন্ত ও কার্যকর করতে বিরোধী দলকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। তাদের পরামর্শ ও সমালোচনা সরকারকে আমলে নিতে হবে।
বুধবার সংসদের বৈঠকের শুরুতেই স্পিকার ও পরে ডেপুটি স্পিকার পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। স্পিকার পদে টানা তৃতীয়বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। ডেপুটি স্পিকার পদে পুনর্নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। এ দুই পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় দুজনকে সর্বসম্মতভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
স্পিকার নির্বাচনের পর সংসদের বৈঠকের বিরতি দেয়া হয় এবং সংসদ ভবনের সপ্তম তলায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে মো. আব্দুল হামিদ প্রথমে স্পিকারকে ও পরে ডেপুটি স্পিকারকে পৃথকভাবে শপথ পড়ান। এর আগে সংসদের চিফ হুইপ পদে নূর-ই আলমসহ ছয় হুইপ পদে নিয়োগ সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হয়।
বিরতির পর সংসদের বৈঠক শুরু হলে স্পিকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ নেতা হিসেবে তার দায়িত্ব যেমন সব সদস্যের অধিকার দেখা, তেমনি স্পিকারের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারি ও বিরোধী সব সংসদ সদস্য যাতে সমান সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করা। এ ব্যাপারে স্পিকারকে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্রই একটি দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আজ তা প্রমাণিত সত্য। আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছি। এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে একটি ক্ষুধা এবং দারিদ্র্যমুক্ত সমাজও গড়ে তুলব।
এমপিদের উদ্দেশে সংসদ নেতা বলেন, যারা এখানে প্রতিনিধি হিসেবে বসেছি, প্রত্যেকেই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। তাদের প্রতিনিধি হিসেবে এখন নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। ভোটারদের সার্বিক উন্নয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে এবং দেশে যাতে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে, যাতে জঙ্গিমুক্ত, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গড়ে ওঠে এবং মানুষের জীবনে যাতে শান্তি ও নিরাপত্তা থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Leave a Reply