ডেস্ক রিপোর্ট : আগামীকাল শুক্রবার থেকে আবারও সারাদেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল বুধ ও আজ বৃহস্পতিবার বৃষ্টিপাতের প্রবণতা একটু কম থাকলেও মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকায় ৪ অথবা ৫ অক্টোবর থেকে আবারও সারাদেশে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে এবং তা আগামী ৮ বা ৯ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট আবহাওয়া অফিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পযন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১২২ মিলিমিটার। এছাড়া, গতকাল বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চেরাপুঞ্জিতে ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর দেশের ভেতরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে সিলেট অঞ্চলে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জে ২৪৫ মিলিমিটার, জাফলংয়ে ১৩৭ মিলিমিটার, কানাইঘাটে ১১৩ মিলিমিটার, ছাতকে ১৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা ছাড়া দেশের সব নদ-নদীর পানি বাড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
ভারী বর্ষণ ও উজানের পানির ঢলে ইতোমধ্যে ছয়টি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান গতকাল বুধবার বলেন, গঙ্গা-পদ্মার পানি বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
এর ফলে গঙ্গা-পদ্মা ও গড়াই নদী সংলগ্ন পাবনা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তবে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও সুরমা-কুশিয়ারার পানি কমতে পারে বলে আরিফুজ্জামান জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড যে ৯৩টি পয়েন্টে নদ-নদীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে, তার মধ্যে ৫৬টি পয়েন্টে পানি বাড়ছে, কমছে ৩৭টি পয়েন্টে। আর ৬টি পয়েন্টে নদী বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে।
সেপ্টেম্বরের শেষে ভারতের বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের অনেক জায়গায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের প্রভাবে দেশে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। এর মধ্যে বন্যার কারণে ফারাক্কা বাঁধের ১১৯টি গেইটের সবগুলোই গত সোমবার খুলে দেয় ভারত। এর মধ্যে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলার কিছু স্থানে স্বল্প থেকে মধ্য মেয়াদী বন্যা দেখা দেয়।
প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, উজানে বৃষ্টিপাত কমে এলে চলতি সপ্তাহের শেষার্ধ থেকে গঙ্গা নদীর পানি কমতে পারে। তখন বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে। অক্টোবর মাসে দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দু’টি নিম্নচাপের সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।
অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেবে।
Leave a Reply