খন্দকার আলাউদ্দিন ॥ ঈদের ছুটিতে ভ্রমন পিপাসুদের অপেক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে হবিগঞ্জের পর্যটন সম্ভাবনাময় চুনারুঘাটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলো। প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও রেমা কালেঙ্গা অভয়ারন্যে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এবারও বাড়ানো হয়েছে নানা সুবিধা। নির্মাণ করা হয়েছে নতুন নতুন স্থাপনা। নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশ ও বিজিবি’র পাশাপাশি আনসার সদস্য ও ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োজিত থাকবে পর্যটন পুলিশ সদস্যও। সাতটি ছড়ার সম্বনয়ে গঠিত সাতছড়ির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে এবারও পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে। জানা গেছে, গত অর্থ বছরে পরিবেশ বান্ধব পর্যটন ব্যবস্থাপনায় আগত পর্যটকদের জন্য নতুন টুরিষ্ট স্প, বসার বেঞ্চ, বণ্যপ্রাণীর আভাসস্থল, ট্রেইল সংস্কার, দোলনা, বিলবোর্ড, পানি ও টয়লেট ইত্যাদি নতুন সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া ফরেষ্ট গেষ্ট হাউজ, স্টুডেন্ট ডরমিটরি, ইন্টার পিটিশন সেন্টার ও ইকো-কটেজগুলো ঝাড়মোছ করা হয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে মেইন গেইটের সামণে রাখা হয়েছে টিকেট কাউন্টার। এখানে প্রাপ্ত বয়স্ক ২০ টাকা, অপ্রাপ্ত/ছাত্র ১০টাকা ও পার্কিং ২৫ টাকা এবং পিকনিক স্পট ব্যবহারের জন্য প্রতিজন ১০ টকা জমা দিয়ে টিকেট কিনতে হয়। উদ্যানে বেড়ানোর জন্য রয়েছে দক্ষ ইকো গাইড। বাড়ানো হয়েছে জনবল। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ঈদের দিন থেকে পরবর্তী ৫দিনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১৫ জন আনসার সদস্য। তাদের পাশাপাশি পর্যটন সহায়ক পুলিশ, বিজিবি টহল এবং ভলান্টিয়ারতো রয়েছেই। চুরি ছিনতাই রোধে পার্কে থাকবে মোবাইল টিম। তারা ঈদের দিন থেকে পার্ক এলাকায় টহল দিবে। এ ব্যাপারে সাতছড়ি পার্কের ঈদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, আমরা পর্যটকদের কথা চিন্তা করেই নানা ফ্যাসিলিটি বাড়ানোসহ তাদের নিরাপত্তার জন্য সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছি। নিরাপত্তার জন্য মোবাইল টিম ও বিজিবি এবং পুলিশের আলাদা মোবাইল টিম রয়েছে। তিনি এ জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ১৯৭ প্রকৃতির জীব বৈচিত্রের রয়েছে ভরপুর। ১৯০ প্রজাতীর গাছপালার মধ্যে রয়েছে জাম, সেগুন, কড়ই, জারুল, বহেরা, হরতকি, পাম, গর্জন, চাপালিশ ইত্যাদি। ১৪৯ প্রজাতির পাখির মধ্যে রয়েছে ধনেশ, ময়ুর, বনমুরগ, ময়না, টিয়া, শালিক, মাছরাংগা ইত্যাদি। ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪ প্রজাতির স্থন্যপায়ী, ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী। এদের মধ্যে বানর, হনুমান, চশমা বানর, বনবিরাল, মেছোবাঘ ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে ত্রিপুড়া সম্প্রদায়ের ২৪-২৫ টি আদিবাসী পরিবার। আদিবাসী লোকেরা তাদের নিজের সং¯ৃ‹তি রক্ষায় কাপড় বূনন ও পার্শ্ববর্তী চা বাগানে কাজ করে তাদের জীবন জীবিকা চালাচ্ছে। এদিকে উপজেলার রেমা কালেঙ্গা অভয়ারণ্যেও পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। এর বাইরে উপজেলার ২৪টি চা বাগান, আদিবাসী পল্লী ও সীমান্ত এলাকায়ও পর্যটকদের উপচেপড়া ভীড় জমে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Leave a Reply