শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৯ অপরাহ্ন

জেলা প্রশাসকের মহতী উদ্যোগ: নিজভূমে পরবাসী গোলগাও!

নুর উদ্দিন সুমন, বার্তা সম্পাদক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০
  • ২৭৩ বার পঠিত

নুর উদ্দিন সুমন : গ্রামের নাম গোলগাঁও। সেটি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের প্রত্যন্ত অঞ্চল। গ্রামটি খোয়াই নদীর গর্ভে অবস্থিত। নিজ ভূমে হলেও গ্রামটি পরবাসী! যাতায়াতের কোনো সুবিধা নেই। স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যবধি যাতায়াতের কোন- সু ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। গ্রামটি চারদিকে মরা নদীতে বেষ্টিত। জনসংখ্যা প্রায় ২হাজার হবে। ওই গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গ্রামবাসীর উদ্যোগে চারটি মসজিদ রয়েছে। নৌকা যোগে খোয়াই নদী পারাপারিই একমাত্র ভরসা। যেকারণে ওই গ্রামে সরকারির বেসরকারী ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যেতে পারেননা কেহ । এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভোটের সময় সব রাজনৈতিক দলগুলোই ফায়দা তোলার জন্য পরিবারগুলির কাছে গিয়ে ভোট ভিক্ষা করে। কিন্তু ভোট মিটে গেলে তাদের দিকে আর ফিরেও তাকায় না। এদের ভোটেই রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা নির্বাচিত হয়ে আসেন। অথচ এই গোলগাঁওয়ে তেমন কোনও আর্থিক সাহায্য বা সুযোগ সুবিধা পান না। সবধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত গোলগাঁওয়ের মানুষ। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে অসহায় কর্মহীন দিনমজুর হতদরিদ্র পরিবারগুলো খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। আর এই গ্রামের পরিবারগুলির অসহায়ত্ব কথা জানতে পারেন একই গ্রামের সংবাদকর্মী নুর উদ্দিন সুমন । এই পরিবারগুলির মানুষজনের কথা শুনে তিনি রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যান। পরিবারগুলির অধিকাংশ সদস্যেরই বয়স ৫০ থেকে ৭০-এর মধ্যে। কারওর বয়স আবার তারও বেশি। তাদের কথা স্থানীয়দের কাছ থেকে জানার পর সাংবাদিক নুর উদ্দিন সুমন এই পরিবারের কথা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান এর ফেসবুক মেসেঞ্জারে অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছিলেন । অবশেষে গোলগাঁও গ্রামের ১৫ টি পরিবার সহায়তা হিসাবে খাদ্য সামগ্রী পেয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ এর কাছে প্রেরণ করেন। ২০ মে দুপুরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্লাবন পালের সহযোগীতায় ৬নং সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ কাউছার বাহার কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্য সমগ্রী ও নগদ ১শত টাকা তুলে দেন।

সহায়তা গ্রহনকারী সুফিয়া বেগম ও রহম আলী জানান এই সহায়তার মধ্যে ১০কেজি চাউলে কয়েকদিন চলে যাবে। কিন্তু তারপর কি হবে জানি না। পরিবারের আমরা কেউ কাজ করতে পাড়ছিনা। আরেক বৃদ্ধ নারী রজবুন্নেছা জানান, আমাদের খবর কেউ রাখেনা,ডিসি স্যার খবর পেয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। এজন্য স্যারের জন্য দোয়া করি।
এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের নিকট একটাই দাবী নিজভূমে পরবাসী গোলগাঁও গ্রামটি সরেজমিন পরিদর্শন করে যেন, চলাচলের জন্য একটি ব্রিজ নির্মান করে দেন।

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, হট লাইন নম্বর খোলা হয়েছে। পাশাপশি ফেসবুকে যেসব মেসেজ আসছে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই যেখানে যখন খবর পাচ্ছি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যত দূর সম্ভব আমরা সহায়তা প্রদান করে আসছি। এছাড়া তিনি ওই গ্রামটি ঈদের পর পরিদর্শনে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2019 Prothomsheba
Theme Developed BY ThemesBazar.Com