নুর উদ্দিন সুমন : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বেশ কয়েকটি স্থানে সরকারী সড়ক দখল করে চলছে রমরমা বালুর ব্যবসা। রাস্তা বন্ধ করে বালির স্তুপের সামনে ট্রাক দাঁড় করিয়ে চলছে লোডিং-আনলোডিং। সড়কের অধিকাংশ জায়গায় বালুর স্তুপ আর সারাদিন বালুর ট্রাকের দখলে থাকায় সাধারণ পথচারীরের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঘটছে দুর্ঘটনাও। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চুনারুঘাট পৌরশহরের ডিসিপি হাইস্কুল রাস্তায়, রাজারবাজার, আমতলী, বদরগাজী, মির্জাপুর ডেউয়াতলী প্রবেশ পথের ৫নং শানখলা ইউনিয়ন সংলগ্ন রাস্তাসহ বেশ কয়েকটি সড়কে বছরের পর বছর বালু রেখে ব্যবসা করে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। বিষেশ করে ডেউয়াতলী প্রবেশ পথের অদূরে বালুর চাতাল তৈরি করে সেখানেই বালুবাহী ট্রাক লোড-আনলোড করা হচ্ছে। বালু উড়ে এ সড়কে চলাচলকারীদের চোখ, মুখ ও নাকে যাচ্ছে। ফলে এই সড়কে চলাচলকারী শত শত বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চললেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ স্থানীয়দের। একই সাথে ১০ চাকার ভারি ট্রাক চলাচল করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই সংযোগ সড়কগুলো। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পানছড়ি থেকে বালি উত্তোলন করে ট্রাক্টরে করে এনে ফেলা হচ্ছে সড়কের উপর। ওই সড়কের ৫নং শানখলা ইউনিয়ন সংলগ্ন এলাকায় সড়কের উপর দিনে দুপুরেই শত শত ট্রাক দাঁড় করিয়ে তোলা হচ্ছে বালু। সংযোগ এই সড়কগুলোতে ভারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ৩০ থেকে ৪০ টন বালু নিয়ে দিব্যি চলাচল করছে দশ চাকার ট্রাক। প্রতিদিন শত শত ট্রাক হাজার হাজার টন বালি নিয়ে চলাচল করায় সড়কগুলোর ইট-বিটুমিন উঠে গেছে। কোথাও কোথাও দেবে গিয়ে চলাচল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বালির ট্রাক চলাচল করায় প্রতিনিয়ত উড়ছে ধুলাবালি। পিচ ঢালা পাকা রাস্তা হলেও বালি জমার কারণে এখন রাস্তাগুলো কাঁচা রাস্তার মতোই হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কে চলাচলে ভীষণ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। গেল বছর বালুবাহী ট্রাকের সাথে ধাক্কা লেগে বদরগাজী এক যুবকের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও অজ্ঞাত কারণে তারা নীরব ভূমিকা পালন করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন নদীও ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাকে করে তা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাচ্ছেন। কিন্তু ইজারাদারেরা নিজস্ব জায়গায় বালু লোড আনলোড করার পরিবর্তে রাস্তার দু’পাশে বালু লোড আনলোড করছেন। ৫নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান তরফদার সবুজ জানান, আইনশৃঙ্খলা সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। আগামী সভায় আবারও বিষয়টি তোলা হবে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এখানে সড়কের জায়গা দখলে নিয়ে বালুর ব্যবসা চলছে। এ বালু নদী ও ছড়া থেকে উত্তোলন করে এখানে বিশাল বিশাল চাতাল করে মজুদ রাখা হয়। রাস্তার মধ্যে বালু ফেলে তা ট্রাকে তোলায় আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে রাতে বেশি সমস্যা হয় কারণ কুয়াশায় অনেকসময় দাড়কড়ানো ট্রাক দেখা যায়না ফলে দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে। এমনাবস্থায় একজনের মৃত্যুও হয়। প্রশাসনকে বার বার অভিযোগ করার পরও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বালুমহালের বেশ কয়েকজন ইজারাদার জানায়, আমরা সড়কের উপর বালি রাখতে এবং সড়কের উপর ট্রাক দাঁড় করিয়ে বালু লোড না করার জন্য নিষেধ করেছি। ইজারাদারদের নির্দেশনাও দেয়া আছে। কিন্তু তারপরও তারা তা মানছে না।
স্থানীয় চালকরা জানান , উল্লেখিত সড় গুলো দিয়ে শত শত যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে। জরুরি পণ্যসহ বিভিন্ন মাল এ সড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়। ব্যস্ত এ সড়কে বালু ব্যবসায়ীরা ট্রাক দাঁড় করিয়ে বালু লোড-আনলোড করে। এতে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে এ সড়ক দিয়ে গাড়ি চালাতে পারছি না। এ বিষয়ে চুনারুঘাটের ভারপ্রাপ্ত ইউএনও আরডিসি মোহাম্মদ মাসুদ রানা বলেন নিউজ করেন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply